সাইয়েদ বাবু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কুড়িগ্রামে ভেঙে পড়া সেতু ১৫ বছরেও সংস্কার হয়নি

ব্রিজ ভেঙে পড়ায় নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছেন ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি : কালবেলা
ব্রিজ ভেঙে পড়ায় নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছেন ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নামা ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামবাসীকে একমাত্র নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নিয়মিত চলাচল করতে হচ্ছে। সেতু ভেঙে পড়ার দীর্ঘ ১৫ বছরেও দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কাটেনি।

বর্ষার শুরুতেই প্রতি বছর গ্রামের মানুষদের দেওয়া চাঁদার টাকায় নিয়মিত সংস্কার করতে হয় ওই সাঁকোটি। বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস আর সান্ত্বনা পেলেও তাদের কপালে জুটছে না একটি সেতু।

রোববার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই সাঁকো দিয়ে পার হতে হচ্ছে খালের দুই দিকের গ্রামের বাসিন্দাদের। পাশাপাশি দুই দিকে মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদেরও ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। দিন দিন এখন যেন এক মরণফাঁদ হয়ে উঠছে নড়বড়ে রেলিংবিহীন এই সাঁকোটি। ইচ্ছে না থাকলেও কোনো উপায় নেই। কেননা, বাঁশের চাটাই বিছানো ২ ফুট প্রস্থ আর ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটি ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও নেই। এতে প্রতিনিয়ত চরম হতাশা, ক্ষোভ আর ঝুঁকি নিয়ে রোজ পারাপার হতে হচ্ছে দুই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে।

পারাপার নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে হাজারও আবেদন আর অভিযোগ জমা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

সাঁকো দিয়ে চলাচলরত রিকশাচালক জলপট্টি মিয়া বলেন, রিজার্ভ ছাড়া এই দিকে তেমন একটা ভাড়া নিই না। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়া গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকি। ১৫ বছর আগে এখানে বাঁধ ছিল। বানের পানি আসার পর থেকে এইটা খাল হইয়্যা গেছে।

ভেলাকোপার কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সাইকেল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে শহরে চলাচল করি। নড়বড়ে এই সাঁকো পার হতে খুব কষ্ট হয়। মাঝেমধ্যে আতঙ্কে থাকি কখন জানি পানিতে পড়ে যায়।’

আরেক বাসিন্দা উমর আলী বলেন, আমরা এলাকাবাসী চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। সারা বছর এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়। তা ছাড়া হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া দুষ্কর হয়ে যায়। আমরা দ্রুত একটা ব্রিজ চাই।

কলেজ শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বলেন, শহরে কলেজে যেতে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। অনেক স্থানের বাঁশের চাঁটাইগুলো পঁচে গেছে। একটি ব্রিজ হলে আমাদের অনেক উপকার হতো।

১ নম্বর কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন কবির বলেন, আমরা তো ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাই। তারপরও দুর্ঘটনার ভয় তো থাকেই। আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব চিন্তা হয়। এখানে একটা ব্রিজ জরুরি হয়ে পড়েছে।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, আমরা এখানে একটি কার্লভাট করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিয়ত চিঠি পাঠাচ্ছি। সমস্যাটা হলো এলজিইডি পৌরসভার ভেতরে কাজ করতে চায় না। আমরা চেষ্টা করছি কোনো না কোনো ফান্ড থেকে এখানে কালভার্ট নির্মাণ করার।

কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, নামা ভেলাকোপা ব্রিজের চাহিদার বিষয়টি অনেক আগেই ঢাকায় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে অর্থ বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি। ফান্ডের ব্যবস্থা হলেই টেন্ডার করে ওখানে কাজ শুরু করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচনে আমরা রেফারির মতো কাজ করবো : সিইসি

হামলা বন্ধে ইরানকে প্রস্তাব দিল জার্মানি-ফ্রান্স-যুক্তরাজ্য

সন্ধ্যায় নিয়ে যায় শাহরিয়ারকে, সকালে মিলল হাত-পা বাঁধা মরদেহ

অতিরিক্ত ৪ ডিআইজি বদলি

ডালাস মাতাল নগর বাউল জেমস

‘ঘটনাস্থলে না থেকেও’ হত্যা মামলার আসামি ছাত্রদল নেতা

নতুন কোচ পেল ইতালি!

ট্রাম্পের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পরই ঘুরে গেল দৃশ্যপট

যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ

ধূমপায়ীরা যে টোটকায় ফুসফুস পরিষ্কার করতে পারেন

১০

জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: প্রেস উইং

১১

‘ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ’

১২

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কোটি টাকার বৃষ্টি, কার পকেটে কত গেল?

১৩

আন্দোলন চলবে, চালু থাকবে নাগরিক সেবা: ইশরাক

১৪

একযোগে ইসরায়েলে দুদেশের মিসাইল হামলা

১৫

ইরানের দুঃসময়ে পাশে এল কাতার

১৬

হাজার মাইল উড়ে ফিরে এলেন ইসরায়েলি নারী পাইলট

১৭

যুবলীগ থেকে গণঅধিকার পরিষদ-বিএনপি এখন তিনি এনসিপিতে

১৮

আল আহলির বিপক্ষে ড্র দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু মেসিদের

১৯

যুদ্ধের কারণে ইরানে আটকে গেছেন ইন্টার মিলান তারকা

২০
X