পাবনার ঈশ্বরদীতে বালু ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে তাফসির আহমেদ মনাকে (২২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত তাফসির আহমেদ মনার মা নাহিদা আক্তার লিপি বাদী হয়ে সোমবার রাত ১২টার পর ঈশ্বরদী থানায় যুবলীগকর্মী আমজাদ হোসেন অবুঝকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ওসি অরবিন্দ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত যুবকের মা বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। আমরা ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর ফটু মার্কেট সংলগ্ন পদ্মানদীর ও কৃষিজমি থেকে মাটি ও বালু কাটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এই নিয়ে প্রতিপক্ষ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর সঙ্গে মনার পক্ষের লোকজনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিন আগে প্রতিপক্ষ ওই গ্রুপটি মনার পক্ষের শাহিন নামের যুবলীগের এক কর্মীর মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় যুবলীগকর্মী মো. লিটন, লিখন, রাজিবসহ কয়েকজনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপটি শাহিন গ্রুপের লোকজনকে হত্যার জন্য সাতদিনের আল্টিমেটাম দেয়। এরপরই মনাকে তারা গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত তাসফির আহম্মেদ মনার মা লিপি খাতুন জানান, পদ্মানদী থেকে বালু ও মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীসহ পাকশীর কিছু লোক মনার ভাই সৌরভকে খুন করার চেষ্টা করে। কিন্তু সৌরভ বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় তারা মনাকে হত্যা করেছে। আমি আমার কলিজার টুকরো মনা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
মনার বড় ভাই তানভির রহমান তনু বলেন, মনা পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর ফটু মার্কেটসংলগ্ন পদ্মা নদী থেকে মাটি ও বালু কাটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই নিয়ে প্রতিপক্ষ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর সঙ্গে মনার পক্ষের লোকজনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। কয়েক দিন আগে প্রতিপক্ষ ওই গোষ্ঠী মনার পক্ষের শাহিন নামের যুবলীগের এক কর্মীর মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় যুবলীগকর্মী মো. লিটন, লিখনসহ কয়েকজনের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন) মাসুদ আলম জানান, নিহত মনার বড় ভাই সৌরভ হাসান টুনটুনির হাত কেটে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সদরুল আলম পিন্টু খুন হন। সেই মামলায় নিহত মনাসহ তার ভাইয়েরা আসামি হয়েছে। পিন্টু হত্যার জের, পদ্মানদীর থেকে বালু মাটি কাটার বিষয় নিয়ে লিটন গ্রুপের সঙ্গে মনার পক্ষের শাহিন গ্রুপের মধ্যে রেষারেষিসহ তীব্র কোন্দল চলে আসছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কারণেই মনাকে হত্যা করা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্তব্য করুন