গাইবান্ধায় স্ত্রী যৌতুক দিতে না চাওয়ায় তার জিহ্বা কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা শহরের কুটি পাড়ায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্ত্রী বেবী বেগমকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
রোববার (১৫ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রিপন মিয়া সদর উপজেলার পূর্ব কোমরলই কুঠিপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে। বেবী গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজিপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান এর মেয়ে।
প্রায় ছয় বছর আগে বেবির সঙ্গে বিয়ে হয় রিপনের। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বেবীকে প্রায়ই মারধর করত রিপন। বাধ্য হয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা দেয় বেবী বেগমের পরিবার। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট নয় রিপন। কয়েকদিন আগে আবারও তার বাবার কাছ থেকে জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয় রিপন।
রোববার সকালে টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বেবীকে মারধর করে রিপন। মারধরে বেবী বেগম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ধারাল ছুরি দিয়ে তার জিহ্বা কেটে দেয় রিপন। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় রিপন। পরে বেবী বেগমকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।
স্বজনরা জানান, কাটা জিহ্বার অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে কাঁতরাচ্ছেন গৃহবধূ বেবী বেগম। জিহ্বা কেটে দেওয়ায় খেতে বা কথা বলতে পারছেন না তিনি। শুধু ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করছেন তার ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের কথা।
বেবীর বৃদ্ধা মা রাবেয়া বেগম বলেন, কয়েকদিন আগেও মেয়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার আরেক মেয়ে রিপনকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও সে থামেনি। এ ঘটনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান আক্তার বলেন, বেবি বেগমের জিহ্বায় ১০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা ১৭ অক্টোবর দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বোন মঞ্জুআরা বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। পরে রিপনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন