ঢাকার আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকার ৬৩ বছর পুরোনো একমাত্র খেলার মাঠ রক্ষায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় সহস্রাধিক মানুষ।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের কবিরপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় এলাকাবাসীকে মাঠ রক্ষার দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৬০ সাল থেকে ২১৫ শতাংশের মাঠটি ব্যবহার শুরু করে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। সে সময়ই মাঠকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ কবিরপুর উদয়ন সংঘ নামের একটি সামাজিক সংগঠন ১৯৮৮ সালে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। সেই মাঠটি এখন অধিগ্রহণ করেছে একটি সরকারি সংস্থা। এই মাঠটি রক্ষায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ না হওয়ায় আজ এই দাবিতে আজকের এই মানববন্ধন।
এসময় ’আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘আমাদের মাঠ ফিরিয়ে দিতে হবে’ পোস্টার হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে থাকা মীম আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে কোন খেলার মাঠ নেই। স্কুলের ফাঁকে আমরা এই মাঠে এসে খেলাধুলা করি। এই মাঠেই আমাদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এখন এই মাঠটিও যদি কেড়ে নেয় তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে খেলবো। তাই আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এই মাঠটি যেন তারা কেড়ে না নেয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাইফুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যারা মাদ্রাসায় পড়ি তারা হোস্টেলে থাকার কারণে সারাদিনই পড়াশোনায় মগ্ন থাকি, তাই সেভাবে কোথাও বের হতে পারি না। কেবলমাত্র বিকেল বেলা আসরের নামাজের পরে এই মাঠে একটু খেলাধুলা করি। পাশাপাশি আমাদের মাদ্রাসার বাৎসরিক মাহফিলটিও এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়। তাই আমি সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমাদের মাঠটি রক্ষার দাবী জানাই।
মাঠটির রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ কবিরপুর উদয়ন সংঘের সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের শিমুলিয়া ইউনিয়নে আর কোনো মাঠ নেই। এই মাঠটি কয়েক লাখ লোকের জন্য। এই গ্রামে ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, তিনটি মসজিদ ও দুটি মাদ্রাসা অবস্থিত। আমাদের এই মাঠটি আরএস রেকর্ডে খেলার মাঠ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আমাদের এলাকার সাধারণ মানুষ খেলাধুলা, জানাজা, ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করা হয়। তাই মাঠটি মাঠ হিসেবেই বহাল রাখার আবেদন করছি।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। মাঠ রক্ষার ব্যাপারে এখনো কেউ আমার কাছে আসেনি। তবে এলাকাবাসী যদি বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে আসেন, তাহলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মন্তব্য করুন