রংপুরের পীরগাছায় কাপড় দিয়ে ঘেরা ছাপড়া ঘরে মানবেতর জীবন কাটানো সেই বৃদ্ধা হামিদা বেগম (৭৬) চকচকে নতুন একটি টিনের ঘর পেয়েছেন। গত ১১ অক্টোবর তারিখে কালবেলা অনলাইন ও ইউটিউব চ্যানেলে ‘কাপড় দিয়ে ঘেরা ছাপড়া ঘরে বৃদ্ধার মানবেতর জীবন’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে গত ১৬ অক্টোবর তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি টিনের মেঝে পাকা ঘর প্রদান করা হয়।
রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আগের সেই কাপড় দিয়ে ঘেরা টিনের ছাপড়া ঘরটি আর নেই। সেখানে এখন একটি নতুন মেঝে পাকা করা বারান্দাসহ চকচকে টিনের ঘর শোভা পাচ্ছে। বৃদ্ধার গ্রাম ভ্যানচালক নাতি আনারুল ইসলামের বসতবাড়ির সামনের অংশে ঘরটি করে দেওয়া হয়েছে।
ওই বৃদ্ধার প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগম জানান, ইউএনও অফিস থেকে বৃদ্ধার জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এখন তার খাওয়ার জন্য যদি দুঃস্থ মাতার কার্ড বা সরকারি কোনো সুবিধার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে খুব ভালো হতো।
ভ্যানচালক আনারুল ইসলামের বড় বোন তাহারন বলেন, নানি খুব অসহায়। তিনি এই গ্রামের মায়া ছেড়ে সরকারি ঘরে যেতে চান না। আমার ভাই তাকে এখানে থাকতে দিয়েছে। আমার ভাই বলেছে, নানি যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিনই তিনি এই বাড়িতে থাকবেন। তবে এই ঘর তৈরির জন্য জায়গা দেওয়ার কারণে অনেকেই আমাদের সঙ্গে শত্রুতা শুরু করছে। তারা আমাদের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দিতে চাচ্ছে না।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানতে পেরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক মহোদয় ওই বৃদ্ধার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। আমি সরেজমিনে ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি জরাজীর্ণ অবস্থা। আমি ওই বৃদ্ধাকে বলেছিলাম তিনি ঘর চাইলে ঘর দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি ওই জায়গা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চাননি। তখন তার জন্য এইখানেই থাকার উপযোগী একটা ঘর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ১৬ অক্টোবরে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় সেই ঘর আমরা তার কাছে হস্তান্তর করেছি।
মন্তব্য করুন