গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের সময় এবিএম ফ্যাশন নামে পোশাক তৈরি কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও আগুনে পুড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে কারখানা নিরাপত্তাকর্মী গোলজার হোসেন বাদী হয়ে কোনাবাড়ি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে এই মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে। মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) তাদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন গাজীপুরের আমবাগ পূর্বপাড়া এলাকার মো. শের আলী (১৯), কোনাবাড়ী এলাকার মো. রিফাত (১৯), আমবাগ এলাকার খোবায়েত (২০), কোনাবাড়ী কুদ্দুসনগর পুকুরপাড়া এলাকার মো. নূর হোসেন (১৮), আমবাগ এলাকার শান্ত তালুকদার (২১), বাইমাইল এলাকার মো. ইয়াসিন (১৯), কোনাবাড়ী এলাকার মহিদুল ইসলাম (২০), হরিনাচালা সেলিমনগর এলাকার মো. তোফালে (২২) ও আমবাগ পূর্বপাড়া এলাকার রহিম বাদশা (২২)।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোনাবাড়ি এলাকার এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটিা পোশাক কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনের কারণে গত সোমবার দুপুরের পর কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওই দিন বিকেলে বিক্ষোভ করে কারখানাটি ভাঙচুর করার চেষ্টা করে শ্রমিকরা। বেতন ভাতার বৃদ্ধির দাবির পক্ষে আন্দোলনরত নাম উল্লেখ করা ৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৭০০ থেকে ৮০০ জন শ্রমিক মেইন গেট, সীমানা দেয়াল ও পেছনের গেট ভেঙে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এ সময় কারখানার নিরাপত্তা কর্মী ও অন্য কর্মচারীরা বাধা দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ইটপাটকেলে নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা কারখানার নিচতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্লোরের অফিস কক্ষ, বিভিন্ন মেশিনারিজ, গুরুত্বপূর্ণ গার্মেন্টস এক্সোসরিজ ফেব্রিক্স, তেরি পোশাক, ফেয়ার প্রাইজ শপ, জেনারেটর, কমপ্রেসার ও এসি ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি করে এবং পেট্রোল দিয়ে কারখানার নিচ তলা থেকে চার তলা পর্যন্ত অফিস, ফ্লোর, ফেব্রিক্স গোডাউন, কাটিং এবং সুইং সেকশনে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। পরে কারখানার ভেতর থেকে ইমরান নামে এক শ্রমিকের পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর কারখানা নিরাপত্তাকর্মী গোলজার হোসেন বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
কোনাবাড়ি থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, কারখানা ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্য ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বুধবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন