নারায়ণগঞ্জে গত তিন মাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ জন যক্ষ্মা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯০৪ জন নতুন রোগী।
আজ রোববার (২৫ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পলি ক্লিনিকে জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সাংবাদিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভাটির আয়োজন করে জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।
সভায় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এই জেলায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বেশি। অতিরিক্ত ঝুঁকিতে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মানুষ।
মতবিনিময় সভায় আরও জানানো হয়, নারায়ণগঞ্জে মোট জনসংখ্যা ৪৬ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন। নারায়ণগঞ্জে বছরে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয় প্রায় পাঁচ হাজার রোগী। গত তিন মাসে ১ হাজার ৯০৪ জন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে আড়াইহাজারে আক্রান্ত রয়েছে ২৫১ জন, বন্দরে ১২৪ জন, সদর উপজেলায় ৬৭৭ জন, রূপগঞ্জে ৩৩৯ জন ও সোনারগাঁয়ে ৩১৯ জন আক্রান্ত। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোতে ৫৯ ও বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোতে ১৩৫ জন আক্রান্ত রয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। ৯৭ শতাংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে আর মারা যাচ্ছে দুই শতাংশের বেশি। নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান জানান, প্রতি একজন রোগী পরিবার, স্বজন ও আশপাশের অন্তত ১০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সারা দেশে গড়ে ১ বর্গ কিলোমিটারে ১ হাজার ২৮০ জন মানুষ বসবাস করলেও নারায়ণগঞ্জে বসবাস করে ৫ হাজার ৭৮০ জন। এ জেলায় মানুষের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বেশি। তাই নারায়ণগঞ্জের মানুষের মাঝে যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতন হওয়া বেশি জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ভারতে। তাই বাংলাদেশকে শতভাগ যক্ষ্মা রোগ থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে সরকার। যক্ষ্মা রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
নাটাবের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারি মো. শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, ডা. সামিয়া মোশারফ হোসেন, ব্যাকের নারায়ণগঞ্জ জেলার এরিয়া সুপারভাইজার মাসুমা আখতার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন