মিঠু মুরাদ, পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

লালমনিরহাটে বিদ্যালয়ের আড়াই একর জমি বেদখল

বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা
বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা

দুই একর ৫৮ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়ের পাশে বিভিন্ন মৌজায় ওই আবাদি জমি দখল করে রেখেছেন জমিদাতাদের উত্তরাধিকারীরা। উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালালেও তাতে সফল হয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০ এবং শিক্ষক ও কর্মচারী ২৩ জন রয়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় স্থানীয় লোকজন বুড়িমারীসহ বিভিন্ন মৌজার জমি দান করেন। দলিল ও রেকর্ডমূলে বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ ৭ একর ১৯ শতাংশ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ বিদ্যালয়ের জমিতে ৬ নম্বর সেক্টরের সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে বিদ্যালয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫০ শতাংশ জমি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। ২০১১ সালের দিকে বিনা মূল্যে এই জমি দলিল করে দেওয়া হয়। ওই জমিতে স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন-মাঠসহ মূল ক্যাম্পাস বুড়িমারী মৌজায় ১ একর ৬১ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বাকি জমি পাশের ইসলামপুর, উফারমারা ও জাহামুদ্দিন মৌজায় অবস্থিত। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ২ একর ৫৮ শতাংশ জমি বেদখলে আছে।

এর মধ্যে বুড়িমারী মৌজার দাতা নজরুল ইসলামের দেওয়া ৭০ শতক জমি শুরু থেকে দখল করে রেখেছেন তার ছেলে গোলাম মোস্তফা। অন্যদিকে উফারমারা মৌজার ৯১ শতক জমিদাতা আজিজুল ইসলাম প্রধান।

দাতার এ জমিও প্রথমে ছেলে আতাউর রহমান প্রধান (মৃত) পরে তার স্বজনেরা ৬৮ শতক দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়া দাতা শহীদুল্যা মাস্টারের ছেলে ফরহাদ হোসেন ৪৩ শতক, দাতা জাহামুদ্দিনের ছেলে আছির উদ্দিন আহমেদ ৫৪ শতক এবং দাতা তছির উদ্দিনের ছেলে কমির উদ্দিন মাস্তার ২৩ শতক জমি দখল করে রেখেছেন।

এসব ফসলি জমির বর্তমান বাজারমূল্য এক থেকে দেড় কোটি টাকা। জমি উদ্ধারে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষক ২০০৭ সালে উপজেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দখলদারদের নোটিশ দেন। কিন্তু তারা জমি ছাড়তে রাজি হননি।

জমি দখলের ব্যাপারে মেহেদী হাসান বলেন, আমার বাবা (গোলাম মোস্তফা) অসুস্থ। চাচারা জানিয়েছেন, দাদার অনেক জমি ছিল। কিছু জমি বিদ্যালয়ে মৌখিকভাবে দিতে পারেন। এর কোনো দলিল নেই। জমির দলিল আমাদের কাছে আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত দলিল নিয়ে এলে জমি ছেড়ে দেব।

প্রয়াত জমিদাতা আতাউর রহমান প্রধানের ছেলে আবু মান্নান আতিকুজ্জামান প্রধান বলেন, কোন জমি কোথায় আছে বলতে পারব না। আপনাকে জেনে জানাব।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম খন্দকার বলেন, জমি উদ্ধার করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফলতা আসেনি। এরপরও তিনি ওই জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পাটগ্রামের ইউএনও নুরুল ইসলাম বলেন, এখানে তিনি নতুন যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছেন। কাগজপত্র দেখে জমি উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গৌহাটি টেস্টের আগে ভারত শিবিরে দুঃসংবাদ

শনিবার বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না : শিবির সভাপতি

নাটকীয় জয়ের পরও নিজের ভুলে হতবাক আকবর

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান : প্রধান উপদেষ্টা

নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ 

ভূমিকম্পে ছেলের পর এবার চিকিৎসাধীন বাবার মৃত্যু

তারেক রহমানের জন্মদিনে ৫ হাজার মানুষকে উপহার দিলেন যুবদল নেতা

জামায়াতের নাড়িপোতা পাকিস্তানে : মাহমুদ হাসান 

ঐক্যবদ্ধভাবে পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান গণসংহতির

১০

তারেক রহমান : ইতিহাসের অগ্নিপথ পেরিয়ে জাতির প্রত্যাশার শিখরে

১১

ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাড়িতে আগুন, গ্রেপ্তার ৪ 

১২

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি, সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ কর্মকর্তা

১৩

ডেজার আলোচনা সভা ও স্মরণিকা উন্মোচন

১৪

ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ১০, আহত সাড়ে চারশর বেশি

১৫

তারেক রহমানের জন্মদিনে রক্তস্পন্দনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

১৬

শুক্রবারও কমলো স্বর্ণের দাম

১৭

এনসিপির নির্বাচনী মিডিয়া উপকমিটির প্রধান মাহাবুব আলম 

১৮

ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত রাফির দাফন হবে বগুড়ায় 

১৯

শতাধিক ছিন্নমূল মানুষকে এক বেলা পেট পুরে খাওয়ালেন তরুণরা

২০
X