মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। শ্রীমঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া, জলবায়ু সবকিছুই ক্যাপসিকাম চাষের উপযোগী। যার কারণে সমগ্র উপজেলায় ক্যাপসিকাম চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বাজারমূল্য ভালো হওয়ায় কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রদর্শণী প্লট স্থাপনের মাধ্যমে ক্যাপসিকাম চাষ বাড়াছে। পাঁচ শতক জমিতে এখন ৫৫০টি ‘সুইট বিউটি’ জাতের ক্যাপসিকাম গাছ রয়েছে। প্রায় দুই ফুট উচ্চতার প্রতিটি গাছেই ৭ থেকে ১০টি সবুজ ক্যাপসিকাম ঝুলছে।
এই ক্যাপসিকাম চাষের জন্য বাঁশ, পলিথিন ও নেট দিয়ে রায়হান একটি শেড নির্মান করেছেন। এই শেডের চারদিকে নেট, উপরে পলিথিন ও সিমেন্টের পিলার ব্যবহার করেছেন। বিষমুক্ত এ ক্যাপসিকাম চাষে পোকা-মাকড় থেকে রক্ষার জন্য হলুদ ট্র্যাপ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে জৈবসার। ঝড়-বৃষ্টি, পোকা-মাকড় ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য নেট, পলিথিন দিয়ে এমন শেড তৈরি করা হয়েছে।
উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের খলিলপুর গ্রামের ২৩ বছরের যুবক রায়হান আহম্মদ জানান, মাত্র পাঁচ শতক জমিতে গত সেপ্টেম্বরে ক্যাপসিকামের বীজ রোপণ করেন তিনি। মাত্র ১০ দিনের মাথায় বীজ থেকে চারা বের হয়ে আসে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে তিনি প্রথম গাছ থেকে ৩০ কেজি ক্যাপসিকাম উত্তোলন করেন এবং ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
এখন বিক্রি করছেন ২০০ টাকা কেজি দরে। ইতোমধ্যে তিনি ২০ হাজার টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন। আগামী এক বছর পর্যন্ত তিনি এখান থেকে ক্যাপসিকাম উত্তোলন করতে পারবেন। যা থেকে তার আয় হবে দুই লাখ টাকা। বাঁশ, নেট, পলিথিন, শ্রমিক খরচসহ বাগান গড়ে তুলতে তার মোট খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। কৃষি অফিস থেকে বিনামুল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন জানান, ক্যাপসিকাম চাষ সফল হওয়ায় চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আরো প্রদর্শণী প্লট স্থাপন করা হচ্ছে। বাজারমূল্য ভালো থাকায় কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগও বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করছে।
মন্তব্য করুন