

আন্তর্জাতিক সংগীতমঞ্চে ভারতীয় গৌরবের প্রতীক অনুষ্কা শঙ্কর। গ্র্যামির মঞ্চে বহুবার মনোনয়ন পাওয়া এই বিশ্বখ্যাত সেতারশিল্পী সম্প্রতি এমন এক দুঃস্বপ্নের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, যা শুধু একটি বাদ্যযন্ত্রের ক্ষতি নয়, বরং একজন শিল্পীর হৃদয়ে সৃষ্টি করেছে গভীর ক্ষতের দাগ। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে ভ্রমণের সময় হঠাৎই দুই টুকরো হয়ে যায় অনুষ্কার বহু বছরের সঙ্গী, তার প্রাণ প্রিয় সেতার। আর এই অকল্পনীয় ঘটনার পর ক্ষোভ আর বেদনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনুষ্কা তুলে ধরেছেন বিমান কর্তৃপক্ষের অবহেলার নির্মম চিত্র।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়,সম্প্রতি সেতার ভাঙা নিয়ে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন অনুষ্কা। প্রকাশিত সেই ভিডিও তিনি বলেন, এই দেশ সঙ্গীত-সংস্কৃতির দেশ। অথচ সেখানেই এই দুর্ঘটনা ঘটল। এই প্রথমবার আমি এয়ার ইন্ডিয়ায় বিমানে যাত্রা করলাম। আর প্রথমবারেই আমার এমন অভিজ্ঞতা হলো। আমি সত্যিই খুব ভেঙে পড়েছি। আমার প্রায় সতেরো বছরের ক্যারিয়ার। এত বছরে আমার সঙ্গে কখনো এমনটা ঘটেনি। কখনো আমার কোনো বাদ্যযন্ত্রর এভাবে ক্ষতি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছিল আমার এই সফরে। স্পেশাল হ্যান্ডলিং চার্জ দেওয়া হয়েছিল যাতে আমার সেতারটি সঠিকভাবে গন্তব্যে পৌঁছায়। কিন্তু সেই খরচ নেওয়ার পরও এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে এমন গাফিলতি কীভাবে দেখানো হলো?
এদিকে প্রকাশিত ভিডিও ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমি ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছি। এয়ার ইন্ডিয়ার এই ধরনের দায় সারা আচরণের জন্য আমার প্রাণের প্রিয় সেতারটি ভেঙে গিয়েছে। এটা শুধু অবহেলার ফল।’
উল্লেখ্য, অনুষ্কা শঙ্কর, কিংবদন্তি সেতারবাদক রবি শঙ্করের কন্যা। ছোটবেলা থেকেই সেতারের সুরে বেড়ে ওঠা অনুষ্কা মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে পরিবেশন করেন, আর ১৮ বছরেই প্রকাশ করেন প্রথম অ্যালবাম ‘অনুরাধা’। ধীরে ধীরে তিনি শুধু তার পিতার উত্তরাধিকারই বহন করেননি, বরং তৈরি করেছেন নিজের স্বতন্ত্র সংগীতভুবন—যেখানে আছে পরীক্ষাধর্মী সুর, ইলেকট্রনিক মিশ্রণ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সুর। সংগীতের পাশাপাশি মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও শরণার্থী সংকট—এমন নানা সামাজিক ইস্যুতেও সরব থাকতে দেখা যায় এই শিল্পীকে।
মন্তব্য করুন