লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বাংলাদেশ বার্ড অ্যান্ড লাইফ সোসাইটি’-এর সূচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা শৈলেন্দ্র কুমার রায়। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক তাপস রঞ্জন বনিক।
তাপস রঞ্জন বনিক তার বক্তব্যে বলেন, পাখি আবদ্ধ নয়, উন্মুক্ত। পাখিদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা চিরন্তন। পাখিদের প্রতি ভালোবাসা থাকলে মানুষের প্রতি ভালোবাসা দ্বিগুণ হয়ে যায়। একটি আয়োজনে এক হাজার লোক থাকলেই সেটা সার্থক হয় না বরং দৃঢ় সংকল্পের কয়েকজন থাকলেই তা বাস্তবায়নে যথেষ্ট।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা শৈলেন্দ্র কুমার রায় শহীদ মিনারের বেদিতে দাঁড়িয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। পরে তার বক্তব্যে বলেন, সৃষ্টিকর্তা শুধু মানুষকে সৃষ্টি করেননি। তিনি পরিবেশে বৈচিত্র্যময় সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন। পাখিও এমন একটি সৃষ্টি, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখে।
তিনি আফসোস করে বলেন, অতীতে যত বৈচিত্র্যময় পাখি দেখা যেত, বর্তমানে তা চোখে পড়ে না। বাবুই পাখির উদাহরণ টেনে বলেন, বাবুই পাখির মধ্যে যে শৈল্পিক নিপুণতার দেখা পাওয়া যায় বর্তমানে আমাদের মধ্যে তার বড়ই অভাব। আমরা বাসাবাড়ি কলকারখানা তৈরিতে, আমাদের আধুনিক জীবনব্যবস্থা বাস্তবায়নে নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংস করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শৈলেন্দ্র কুমার রায় এ ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান, যেন সবাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় যত্নবান হই। তিনি বাংলাদেশ বার্ড অ্যান্ড লাইফ সোসাইটির সমৃদ্ধি কামনা করেন এবং সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে মাটির তৈরি পাখির বাসা তুলে দিয়ে সংগঠনটির সূচনা ঘোষণা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অনুপম রায় রূপক বলেন, বাংলাদেশে অতীতে অনেক প্রজাতির পাখি দেখা যেত। বর্তমানে রেডিয়েশন মাত্রা, অতিরিক্ত বনাঞ্চল ধ্বংস করা এবং পাখি শিকারিদের নির্বিচারে পাখি হত্যার মাধ্যমে পাখির সংখ্যা লক্ষণীয় আকারে কমে গেছে। বাংলাদেশ বার্ড অ্যান্ড লাইফ সোসাইটি পাখি ও পরিবেশ রক্ষায় ধারাবাহিক কাজ করে যেতে পারে, এ জন্য সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্র সোহেল রানা, রংপুর পলিটেকনিকের সাবেক শিক্ষার্থী হায়াত আল ফেরদৌস, মিজু রহমান, ইউরোপিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিগন্ত খন্দকার, লালমনিরহাট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, আরমান রহমান ও শামীম রহমান প্রমুখ
মন্তব্য করুন