দীর্ঘদিনের বকেয়া অর্থ পরিশোধের দাবিতে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ঠিকাদাররা। বুধবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে পাউবো রাজশাহী ঠিকাদার কল্যাণ পরিষদ।
কর্মসূচিতে পাউবো ঠিকাদাররা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপদকালীন পদ্মা নদী রক্ষায় সবার আগে ছুটে আসেন ঠিাকাদাররা। তবে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও বকেয়া অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় করা হয় না। স্থানীয় পাউবো কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরাও থাকেন উদাসীন।
তারা আরও বলেন, গত তিন বছর ধরে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজশাহী পওর বিভাগে আপদকালীন কাজের বকেয়া পড়েছে ১৩ কোটি টাকা। এছাড়া পাবনা ও বগুড়া পওর সার্কেলের ঠিকাদাররা বকেয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহীর এক ঠিকাদার জানান, তিনি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে কাজ করছেন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ৩৫০ কোটি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্পের অর্থ বকেয়া রয়েছে। এ নিয়ে ঠিকাদাররা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি।
ঠিকাদাররা বলেন, পাওয়াদারদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। ঋণখেলাপি হয়ে গেছি। জিও ব্যাগের দাম দিতে পারছি না। সিমেন্ট, পাথর ও বালুর দামও বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ হয়নি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থ ছাড় করা না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার কল্যাণ পরিষদের আহ্বায়ক জামাত খান বলেন, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মিলে প্রায় ৩৫ জন ঠিকারদার রয়েছেন। বিশাল টাকা বকেয়ার কারণে চরম হতাশায় ভুগছেন তারা। বাকিতে কাজ করে সময়মতো অর্থ পাওয়া না গেলে আগামীতে ঠিকাদাররা আপদকালীন কাজ করার আগ্রহ পাবে না।
বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার কল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা তপন সেন, সিনিয়র ঠিকাদার খন্দকার হাসান কবীর, ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতা গোলাম নবী রণি, ঠিকাদার কেএম জুবায়েদ প্রমুখ।
পরে ঠিকাদার কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) মহাপরিচালক বরাবর রাজশাহী পাউবো জোনের প্রধান প্রকৌশলীর মাধ্যমে স্মরকলিপি পেশ করা হয়। এছাড়া, ডাকযোগে স্মারকলিপির অনুলিপি অর্থমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাপাউবোর মহাপরিচালক, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরও পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন