বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নে ইতিহাস ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত জমিদার বাড়িগুলো অযত্ন-অবহেলায় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। প্রভাবশালী জমিদার জানকী বল্লভের বংশধরদের হাতে নির্মিত ১৩টি জমিদার বাড়ি এক সময় এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্য বহন করেছে। বাড়িগুলোর নির্মাণশৈলী ও কারুকাজ যে কোনো মানুষকে আকৃষ্ট করে।
১৮ শতকের প্রথম দিকে নির্মিত এসব সুউচ্চ প্রাচীর ঘেরা বিশাল ভবনগুলো বর্তমানে লতাপাতায় ঘেরা জঙ্গলবাড়িতে পরিণত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে শুরু হয় এসব জমিদারের দেশ ত্যাগ। বিশেষ করে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে জমিদার বংশের পতন ঘটে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধে নির্যাতন এড়াতে বাকিরাও ভিটেমাটি ছেড়ে পাড়ি জমান ভারতে। সেই থেকে অযত্নে-অবহেলায় ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এসব মূল্যবান ঐতিহাসিক জমিদার বাড়িগুলো।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে গড়ে ওঠা প্রাচীন আমলে নির্মিত এসব প্রাসাদ সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে সহজেই এলাকাটি হয়ে উঠতে পারে পর্যটকপিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবছর জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সে উপলক্ষে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার লোকের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকাটি। বরিশাল বিভাগ তথা দক্ষিণ অঞ্চলের মধ্যে একমাত্র কলসকাঠিতেই এ পূজার আয়োজন করা হয়। তাই এ সময় এলাকাটি থাকে উৎসবমুখর। কথিত আছে উপমহাদেশের জগদ্ধাত্রী পূজার বড় আয়োজন হয় এই কলসকাঠীতে। পূজার সময় ভারত, নেপালসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন রাজ্যের লোকজনে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে এলাকাটি। এছাড়াও সারা বছর অনেক ভ্রমণপিপাসুর আনাগোনারও কমতি নেই। কৌতূহলী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে কলসকাঠি জমিদার বাড়িগুলো।
এলাকার সচেতন মহল জমিদার বাড়িগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।
মন্তব্য করুন