মোর্শেদা আক্তার নামের এক ব্যক্তি নিজ বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা মোর্শেদাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনরা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে দাফনের উদ্দেশ্যে গোসল করান। এ সময় গোসলদানকারীর মনে সন্দেহ হয় মোর্শেদা আক্তার মারা যাননি। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যান তার স্বজনরা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার দক্ষিণ জামাল মাদবর কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মোর্শেদা আক্তার (৩৮) জাজিরা পৌরসভার দক্ষিণ জামাল মাদবর কান্দি গ্রামের এস্কান্দার মাদবরের স্ত্রী। তিনি জাজিরা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ১০ বছর যাবৎ চাকুরী করেন।
জানা যায়, সকালে মাথা ঘুরে পরে যান মোর্শেদা আক্তার। পরে তাকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরে তার স্বজনরা মোর্শেদা আক্তারের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে দুপুর ২টার দিকে গোসল করাতে নিয়ে যান। গোসলের দায়িত্ব নেন মোর্শেদার মা রোকেয়া বেগম। গোসলের পানি মোর্শেদার শরীরে দিতে গেলে রোকেয়া বেগম দেখতে পান পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, বুকের স্থানটা অনেক গরম অনুভব হচ্ছে। বিষয়টি অন্যান্যদের জানানো হলে তারা এসে মোর্শেদার প্রেশার পরিমাপ করেন। তাদেরও মনে হয় মোর্শেদা জীবিত থাকতে পারেন। পরে স্বজনরা মোর্শেদার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান৷ সেখানেও চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণাই করেন। কিন্তু প্রথমে মোর্শেদা জীবিত এমন খবরে জাজিরাসহ শরীয়তপুর জেলা জুড়ে শুরু হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য।
নিহত মোর্শেদা বেগমের বেয়াই ফারুক বেপারী কালবেলাকে বলেন, আমরা মোর্শেদা আক্তারকে জীবিত ভেবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসছিলাম। এখানকার ডাক্তারও তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
জাজিরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সেকান্দর হাকিদার কালবেলাকে বলেন, মোর্শেদা আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জাজিরা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে তার স্বজনদের মনে হয় মোর্শেদা আক্তার জীবিত। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ঢাকার চিকিৎসকও মোর্শেদা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, নিহতের স্বজনদের অজ্ঞতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কোনো মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার শরীরের রিলাক্স হওয়ার সময় মাসেল একটু নাড়াচাড়া করতেই পারে। এমনটা মেডিকেল সাইন্সেও বলা আছে। একটা মানুষের মৃত্যুর ডিসিশন দেওয়া এতটা সহজ নয়, আমরা আমাদের সকল চেকআপ শেষ করেই নিশ্চিত হয়েই বলেছি তিনি মৃত্যু বরন করেছেন। মূলত নিহতের স্বজনদের অজ্ঞতা ও গুজবের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য করুন