তীব্র শীতে টানা কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে সাদা সোনা খ্যাত রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষকরা। তবে কয়েকদিন ধরে জেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আশানুরূপ ভালো ফলন ও দাম পাবেন বলে মনে করছেন তারা।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর,কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়- বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রসুনের চাষাবাদ হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ আগে জেঁকে বসা শীত ও ঘনকুয়াশায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিল। তবে এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় সাদা সোনা খ্যাত রসুনে আশার আলো দেখছেন তারা। গত বছরের চেয়ে এবার রসুনে ব্যাপক সাফল্যের আশা কৃষি বিভাগের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজারমূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। তাই খরচ বেশি হওয়ার পরও ভালো লাভের আশা করছেন তারা। তবে গত কয়েক সপ্তাহ আগে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে পাতা হলুদ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিল কৃষকরা। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের সুপরামর্শে ও আবহওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা থেকে কাটিয়ে উঠছেন রসুন চাষিরা।
গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়া এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, গত কয়েকদিন আগে রসুন গাছের পাতার রং এমন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল যেন দূর থেকে দেখলে মনে হয় সরিষার ক্ষেত। তবে কিছুদিন থেকে আবহওয়া ভালো থাকায় কীটনাশক স্প্রে ও পরামর্শ পরিচর্যা করে এ অবস্থা থেকে উন্নতি হয়েছে। আমি এ বছর এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি। বেশ ভালো ফলন হবে এবার, দামও গত বছরের থেকে অনেক বেশি।
খামারপাড়া ইউনিয়নের কৃষক মাহফুজ আলম কালবেলাকে বলেন, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে দুশ্চিন্তায় থাকলেও সবকিছু এখন ঠিক হয়ে গেছে। আশা করি ভালো ফলন ও দাম পাব।
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সবসময় রসুনসহ বিভিন্ন ক্ষেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এ বছর রসুনে ব্যাপক সফলতা পাবে।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হাবিবা আক্তার কালবেলাকে বলেন, কিছুদিন আগে শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুন ক্ষেত হলুদ বর্ণধারণ করেছিল। কিন্তু এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় ফলনও ভালো হবে আশা করছি। আমরা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সচেতনতার জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং কৃষকদের যে কোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন