৫ বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জামালপুরের তরুণ রবিউল হাসান রুমানের সাথে পরিচয় মেক্সিকান তরুণী গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের সাথে। এরপর থেকে গড়ে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের টানে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকো থেকে পাড়ি জমান বাংলাদেশে। এরপর জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এসে পছন্দের মানুষকে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে করে ওই মেক্সিকান তরুণী। বিয়ে করতে ধর্মান্তিত ও নিজের নাম পরিবর্তন করেন তিনি। বর্তমানে তার নাম লাইলী।
বিয়ের এক মাসের সময় তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার নিজ দেশে ফিরে যান নাইলি । এর এক মাস পর স্বামীর জন্য ভিসা ও টিকিট বুকিং করে পাঠিয়ে দেন তিনি। এরপর স্বামী রবিউল মেক্সিকোয় পাড়ি জমান। তিনি বর্তমানে তার স্ত্রী লায়লীর কম্পিউটার ও প্রিন্টিং দোকানের দেখাশুনা করেন। পাশাপাশি নিজে গাড়ি মেকানিকের গ্যারেজ করার পরিকল্পনা করছেন। বিয়েতে দুই পরিবার ও তারা উভয়ে খুশি। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে চলছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।
রুমানের বাবা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে রবিউল ইসলাম রুমান। তার সাথে মেক্সিকোর এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়। পরে ওই মেয়ে মেক্সিকো থেকে আমাদের এখানে আসে। আমাদের এখানে আসার পর আমরা সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী তাদের বিবাহ সম্পন্ন করি। বিয়ের পর ওই মেয়ে তার বাড়িতে (মেক্সিকোতে) ফিরে যায়। এরপর মেক্সিকোতে গিয়ে আমার ছেলের জন্য ভিসা ও টিকিট পাঠিয়ে দেয়। পরে আমার ছেলেকে মেক্সিকোতে যায়। আমার ছেলে ওখানে একটা গ্যারেজে কাজ করছে এবং সে চেষ্টা করছে ওখানে একটা গাড়ি ঠিক করার গ্যারেজ করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, আমার বউমা এবং ছেলে দুইজন খুবই ভালো আছেন। আমরা দোয়া করি তারা ভালো থাক এবং তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক।
রুমানের মা রুবি বেগম বলেন, আমার ছেলে আর ছেলের বউ এখন মেক্সিকোতে আছে। খুব ভালো আছে। প্রতিদিন ফোনে কথা হয় ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে। তারা ভালো থাক আমরা এটাই চাই। ছেলের পছন্দই আমাদের পছন্দ। মেয়েটা অনেক ভালোই।
এ বিষয়ে রবিউল হাসান রুমান বলেন, আমি ময়মনসিংহের রুমডো ইন্সটিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করি এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করি। এমন সময় ভালোভাবে ইংরেজিতে কথোপকথনের জন্য ফেসবুকে একজন বন্ধু খুঁজছিলাম। এক পর্যায়ে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর তরুণী গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই বন্ধুত্ব থেকেই প্রেম। দুই বছর প্রেম করার পর বাংলাদেশে আসেন মরালেস। পরে আমি তাকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে নিয়ে আসি।
তিনি জানান, বিমান থেকে নামার পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ঢাকা জজকোর্টে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে নিজের খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করে। তার স্ত্রী লাইলী মেক্সিকোর পো-এবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিওর মেয়ে। সে পো-এবলা বিশ্ববিদ্যালয় (বিইউএপি, পো-এবলা, মেক্সিকো) থেকে ২০১৬ গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে।
রুমান আরও বলেন, আমি মেক্সিকোতে আসার পর আমার স্ত্রীর সাথেই আছি। আমরা অনেক হ্যাপি। আমার স্ত্রীর পরিবারের লোকজন অনেক ভালো। তারা আমাকে অনেক কেয়ার এবং হেল্প করেন। আমি আমার স্ত্রীর কম্পিউটার ও প্রিন্টিং বিজনেস দেখাশোনা করছি। তার পাশাপাশি নিজে গাড়ি মেকানিকের গ্যারেজ করার পরিকল্পনা করছি। আশা করছি আগামী এক বছরের মধ্যে হয়তো সিটিজেনশিপ পেয়ে যাব। এছাড়াও কানাডায় শিফট হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিশেষে ভালোবাসা দিবসে সবার প্রতি শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো।
মন্তব্য করুন