নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৮২টি। তার মধ্যে ২২টিতে নেই কোনো শহীদ মিনার। এসব বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থীরা কলাগাছ বা এ ধরনের কিছু দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানায়।
এলাকার সুশীল সমাজ মনে করছে- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ, দেশাত্মবোধ, ইতিহাস-ঐতিহ্য চেতনা জাগ্রত করার প্রয়োজনে হলেও প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের প্রায় ৭২ বছরেও উপজেলার ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এখনো শহীদ মিনার নেই ২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, যা খুবই দুঃখজনক। যদিও স্কুল পরিচালনা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শহীদ মিনার নেই এমন একটি বিদ্যালয় শিবপুর হোসনে আরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিদ্যালয়ে নতুন বিল্ডিং হওয়ায় শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। অন্য শহীদ মিনারে গিয়ে সেখানে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এখন পর্যন্ত কোনো শহীদ মিনার তৈরি হয় নাই। চাইলেই কিন্তু ছোট আকারে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার তৈরি করা যায়। তবে সমস্যাটা হচ্ছে বরাদ্দ নেই। তবে গত বছর সরকার থেকে একটা নির্দেশনা এসেছে যে স্থানীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের কিন্তু তাও হচ্ছে না।
গন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুসরাত জাহান আজাদী বলেন, আমার বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত গন্ডা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আমরা শহীদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে আসছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাইস্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত। বাকিগুলো তৈরির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব হোসেনের বলেন, কেন্দুয়াতে যে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই তা আমাকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানানো হয়নি। তবে ২২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার দ্রুত নির্মাণের জন্য আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
মন্তব্য করুন