ঈদুল ফিতরের আগের দিন তিনজন মিলে পরিষ্কার করেছিল পারিবারিক কবরস্থানটি। নিজ হাতে তারা দিয়েছিল বাঁশের বেড়া। এর পরদিনই বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে সেখানে দাফন হয়েছে দুজনের।
জানা যায়, ঈদের দিন দেবীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চার কিশোরের মধ্যে দুজন সাব্বির ও কাউছার। নিহত সাব্বির দন্ডপাল ইউনিয়নের বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এবং কাউছার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সাব্বির ইয়াকুব আলীর একমাত্র পুত্র এবং কাউছার বাছের আলীর একমাত্র পুত্র। তারা সম্পর্কে একে অপরের চাচা-ভাতিজা হন।
নিহত কাউছারের চাচা মো. হাসমত বলেন, ঈদের আগের দিন আমার ভাতিজা কাউছার এবং নাতি সাব্বির পারিবারিক কবরস্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বাঁশের বেড়া দেয়। ঠিক তার এক দিন পর সড়ক দুর্ঘটনায় তারা মারা যায়। তাদের পরিষ্কার করা সেই কবরস্থানে দাফন করা হয় তাদের।
প্রতিবেশীরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাব্বির, কাউছার এবং আহত জাকারিয়া ৩ জনই খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। ঈদের আগের দিন তারা নিজ উদ্যোগে কবরস্থান সংস্কার করে, এবং দুর্ভাগ্যবশত পরদিনই কাউছার ও সাব্বির মারা যায়। আর জাকারিয়া গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাশাপাশি সাব্বির ও কাউছারকে দাফন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ কবরস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, সেখানে নতুন বেড়া দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে মোটরসাইকেলে ৩ কিশোর দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খাঁ পাড়া থেকে দেবীগঞ্জের দিকে আসছিল এবং অপর একটি মোটরসাইকেলে আরও ৩ কিশোর কালীগঞ্জের লোহাগাড়া থেকে নীলসাগরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নতুন বন্দর এলাকায় চলাচলকারী একটি ভ্যানকে সাইড দিতে গিয়ে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে খাঁ পাড়া এলাকার সাব্বির ও বরকত নামে ২ জন এবং লোহাগাড়া সুপারিতলা এলাকার সাব্বির ও কাউছার নামে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া গুরুতর আহত জাকারিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে তার বাবা জসিম উদ্দিন। আহত সোহেলও এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন