ঈদের দিন বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে প্রকাশ্যে রাস্তায় এক তরুণীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া শৌলা সড়কে।
ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সাদা পায়জামা ও কালো পাঞ্জাবি পরিহিত ২৬-২৭ বছরের এক তরণ ও কালো সালোয়ার কামিজ পরা এক তরুণী হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তরুণের পেছনের দিকে কালো পাঞ্জাবির অর্ধেক ছেঁড়া।
হেঁটে যাওয়ার একপর্যায়ে ওই তরুণ একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে তরুণীকে কিলঘুষি মারছেন। চুল ধরে টানাটানি করছেন। ওই তরুণ সামনের দিকে হাঁটতে থাকলে তরুণী পেছন থেকে যুবকের হাত ধরেন। পরে খানিকটা দুজনে হেঁটে সামনে এগিয়ে গেলে তরুণীকে আবারও ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন ওই তরুণ।
তরুণী ওঠে পুনরায় ওই তরুণের হাত ধরেন এবং সামনে হাঁটতে থাকেন। একপর্যায়ে স্থানীয় জামাল স্যারের বাসার সামনে ওই তরুণীকে চুলের মুঠি ধরে মারতে থাকেন ওই তরুণ এবং ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ফেলে দেন। এভাবে দফায় দফায় তরুণীকে মারধর করা হয়। ওই সময় রাস্তা দিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করলেও তরুণ-তরুণীকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেননি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ৪৬ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরা ভিডিওর নিচে নানা ধরনের মন্তব্য করেন।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সরেজমিন ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, নির্যাতিত তরুণীর নাম মিম। তার বাবার নাম মো. মিলন। স্থানীয় কালাইয়া লঞ্চঘাট এলাকায় তাদের বসবাস। গত এক বছর আগে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের কামরুল নামের এক তরুণের সঙ্গে মিমের বিয়ে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্যাতিত ওই তরুণীর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানান, ঈদের দিন ওই তরুণ তার শ্বশুরের বাসায় আসেন। এরপর স্ত্রীর সঙ্গে মান অভিমান করে বাসা থেকে বের হয়ে যান। স্ত্রীও তার পিছু নেন। একপর্যায়ে রাস্তায় বসে তাদের মাঝে মারামারি, হাতাহাতি ও টানাটানির ঘটনা ঘটে।
জাফর নামে এক পথচারী বলেন, তরুণটি দ্রুত হেঁটে যাচ্ছেন আর তরুণীটি তার পেছন দিক থেকে কালো পাঞ্জাবি ধরে তাকে থামানোর চেষ্টা করতেই জামাটির পেছনের অংশ ছিঁড়ে যায়। তখন ওই তরুণ ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণীটিকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। এভাবে তাকে কয়েক দফা মারধর করা হয়। এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন জানান, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। তবে নির্যাতিত তরুণীর পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।
মন্তব্য করুন