মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তাপপ্রবাহ আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত কৃষককুল, বোরো নিয়ে শঙ্কা

তীব্র গরমে ধানে চিটা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা
তীব্র গরমে ধানে চিটা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা

চৈত্র শেষে বৈশাখ। দেশে পক্ষকালব্যাপী বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। মিলছে না বৃষ্টির দেখা। তীব্র তাপ আর ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। সেই সঙ্গে পুড়ছে কৃষকের কপাল। চারদিকে সবুজ বোরো ধানের সবুজ পাতার উছলে পড়া ঢেউ যখন কৃষকের মনে আনে স্বস্তির সুখ ঠিক তখনই তীব্র দাবদাহে বোরো ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে।

আর প্রকৃতিগত এ সমস্যায় সারা দেশের মতো জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বোরো চাষিদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। মাঠের পর মাঠজুড়ে সেচযন্ত্র থাকলেও বিদ্যুৎতের দেখা মেলা ভার। লোডশেডিংয়ে নাকাল কৃষককুল। দিনে ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললে কষ্ট করে সেচ দেওয়া হলেও পানি জমিতে বেশিক্ষণ থাকছে না। এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ থাকে ৩-৪ ঘণ্টার মতো। এতে করে সেচ পাম্পগুলো ঠিকমতো চালাতে পারছেন না কৃষকরা। বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া-আসা এবং ভোল্টেজ কম থাকায় মোটর পুড়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে, পানির অভাবে জমি ফেটে যাচ্ছে। ধানের থোড় বের হওয়ার পর কিছু কিছু জমির থোড় শুকিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ অবস্থার পরিবর্তন না হলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের।

উপজেলার ফুলকোচা গ্রামের কৃষক সুজন মিয়া বলেন, বোরোর আবাদ কইরা আমরা বর্তমানে খুব বিপদের মধ্যে আছি। মাঠে যে থুর ধানগুলা বাইর হইতাছে, ঠিকমতো সেচ দিবার পাইতেছি না। এই ধানগুলা চিটা হইব।

কমলাবাড়ী গ্রামের কৃষক জাবেদ আলী বলেন, কি আর কমু, গলা জড়াইয়া আহে, আবাদ তো নষ্ট হইয়া গেল। তাপের চোটে ক্ষেতে পানি থাহে না। মোটর দিয়ে পানি দিমু কারেন্টও থাহে না। আহে আর যায়। মোটর ইস্টার্ট দেই ক্ষেতে পানি যাওয়ার আগেই কারেন্ট যাই গা। এহন আমাদের মরণ ছাড়া কোনো উপায় আছে? কন! পানি দিবার না পাইলে তো সব শেষ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ২৫০ হেক্টর কিন্তু চাষ হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। হিসাবমতে, ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ কম হলেও ফলন দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পুষিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা ছিল বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল ফয়সাল কালবেলাকে বলেন, প্রকৃতিগত সৃষ্ট এ সংকট আর লোডশেডিং সমস্যায় উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তবে উপজেলার বোরো আবাদের প্রায় ৩০ ভাগ ধান পেকে যাওয়ার কারণে এই ধানগুলোর কোনো ক্ষতি হবে না। তবে বাকি যে ধানগুলো থোড় অর্থাৎ বের হচ্ছে যদি এ রকম তাপ প্রবাহ আরও সপ্তাহ নাগাদ থাকে তাহলে গাছের গোড়ায় পানি না থাকার কারণে ধানে চিটা হতে পারে।

তিনি জানান, আর এজন্য প্রত্যেকটি এলাকায় গ্রুপভিত্তিক কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকেও আমরা অনুরোধ করেছি এ সংকট মোকাবিলায় রাত ১২টার পর থেকে নিরবচ্ছিন্ন টানা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়ার, যেন কৃষক সেচ দিতে পারেন। পানির কারণে ধান গাছের পরাগায়ন যাতে ব্যাহত না হয়। আর ধান ছাড়া অন্যান্য ফসলে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান উপজেলার এই কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কোপার আগে চোটের মিছিলে আর্জেন্টাইনরা

ইসরায়েলের সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ আগুন

বয়স বাড়লেও শরীর বাড়ে না, ৪০ বছরের সুমন যেন শিশু

ভোটের কালির গোপন ফর্মুলা

ইসরায়েলি ট্যাংকে নাটকীয়ভাবে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের গেরিলা হামলা

এসএসসি উত্তীর্ণদের শিক্ষাবৃত্তি পেতে আবেদন করবেন যেভাবে

শিল্পী সমিতির নির্বাচন বাতিল চেয়ে নিপুণের রিট

লিচুর বিচি আটকে আ.লীগ নেতার মৃত্যু

মার্তিনেজকে মনে করালেন ম্যানসিটি গোলকিপার

জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও পুলিশ

১০

বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার খবর কী

১১

ইমরান খানের মুক্তি চেয়ে পোস্টারে সই করে বিতর্কে রিজওয়ান!

১২

ফের বৃষ্টি শুরু কবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

১৩

নোবেল বিজয়ী এলিস মুনরো মারা গেছেন

১৪

আরসার আস্তানায় অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব

১৫

মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো কবে নিজ অর্থ নিতে পারবে, জানতে চেয়েছেন লু

১৬

১৫ মে : নামাজের সময়সূচি

১৭

হলান্ডের জোড়া গোলে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে ম্যানসিটি

১৮

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৯

বুধবার ঢাকার যেসব এলাকায় যাবেন না

২০
X