জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে ব্যাপক হারে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে খামারি ও কৃষকদের মাঝে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত গরু সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি মারাও যাচ্ছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত গরু বেশির ভাগই বাছুর। আক্রান্ত পশু নিয়ে অনেকে ছুটছেন চিকিৎসক ও প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে। ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সময়মতো মিলছে না বলেও অভিযোগ অনেকের। রোগটি এক ধরনের ভাইরাসজনিত এবং ছোঁয়াচে হওয়ায় এক পশু থেকে অন্যটিতে সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় পশু চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ ও চিকিৎসা নেওয়ার পরেও ভালো না হওয়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ছুটছেন।
কৃষকরা বলছেন, গরু নিয়ে গ্রাম থেকে প্রাণিসম্পদ অফিসে গরু নিয়ে আসলেও চিকিৎসকরা চেকআপ করে প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন, কোনো ওষুধ দিচ্ছেন না। বাজারের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। তবে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষ বলছেন এই রোগের ভ্যাকসিন অফিসে নেই।
আরও পড়ুন : লাম্পি স্কিন ডিজিজ ঝুঁকিতে গবাদি পশু
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচবিবি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে প্রায় এক লাখ ৭৪ হাজার গরু লালন পালন করা হচ্ছে খামার ও কৃষকের ঘরে। এখানে ছোট বড় খামার রয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার হাজার। বর্তমানে লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় চিন্তিত সবাই।
পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার মুনু মিয়া বলেন, আমার গ্রামে প্রথম আমার বাছুরের এই রোগ দেখা দেয়। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে নিয়ে আসি ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য।
একই উপজেলার আয়মা জামালপুর এলাকার আব্দুল আলিম বলেন, আমাদের গ্রামে গত এক সপ্তাহে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে তিনজনের গরু মারা যায়।
আয়মা রসুলপুর গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, রাতের বেলায় ভালো গরু গোয়ালে রেখেছি, সকালে দেখি চামড়ায় প্রথমে গুটি বের হয়ে ফোসকা পড়েছে, পরে জ্বরের কারণে কাঁপুনি ও খাবার ছেড়ে দেওয়ায় দুর্বল হয়ে পরে গরু মারা যাচ্ছে। আমার গ্রামে একজনের গরু মারা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নিয়াজ কাজমীর বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। বর্তমানে আমাদের উপজেলায় যেটির প্রভাব দেখা দিয়েছে সেটি হলো ল্যাম্পি স্কিন (এলএসডি) ভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন সরকারিভাবে এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। একারণে আমরা একটু চিন্তিত। তবে, লাম্পি স্কিন গড ফক্সের ভ্যাকসিন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। তবে বেসরকারিভাবে কিছু কিছু ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম বেশি। এখন পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ১৫/২০টি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন