চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ঘূর্ণিঝড় রিমাল

বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হাসপাতালে টর্চের আলোয় ২ নবজাতকের জন্ম

জন্ম নেওয়া নবজাতক। ছবি : কালবেলা
জন্ম নেওয়া নবজাতক। ছবি : কালবেলা

একদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব, অন্যদিকে বেড়েছে প্রসূতির প্রসববেদনা। উপায় না পেয়ে স্বজনরা ঝড়ের মধ্যেই প্রসূতিকে নিয়ে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হাসপাতাল। প্রসূতির প্রসব যন্ত্রণা বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতে পৃথিবীর আলো দেখল দুই নবজাতক।

সোমবার (২৭ মে) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে দুই নবজাতককে পৃথিবীর আলো দেখান ডা. সুমাইয়া ইসলাম।

জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার দূরবর্তী ইউনিয়ন চরকিং থেকে রাত ১২টায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ফ্যান্সি বেগম (৩০)। একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু জন্মের মাধ্যমে তিনি ৫ম বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় রিমালের রাতে। কিন্তু প্রসবের পর তার প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ইউএনএফপিএর সাপোর্টে ও পার্টনার্স ইন হেলথ ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক নিয়োগকৃত ডা. সুমাইয়া ইসলাম এবং মিডওয়াইফ সাবরিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় মায়ের সুস্থভাবে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব হয়। সেই সঙ্গে ব্লাড ট্রান্সফিউশন এবং সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে রোগীর প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম হন তারা।

আরও জানা যায়, দ্বিতীয় রোগী হাতিয়া উপজেলায় নিজ বাসায় ডেলিভারির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবস্ট্রাক্টেড লেবার নিয়ে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। রোগীর হিমোগ্লোবিন ৬.৫ শতাংশ থাকায় জরুরি ভিত্তিতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে ডা. সুমাইয়ার তত্ত্বাবধানে মিডওয়াইফ মিম এবং সাবরিনার সহোযোগিতায় ওই রোগীরও স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হয়। কিন্তু প্রসব পরবর্তীতে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়। বর্তমানে দুই মা ও দুই শিশু সুস্থ আছে।

ডা. সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে হাতিয়া উপজেলায় গত ২৬ মে রাত থেকে ইলেকট্রিসিটি ছিল না। ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব চলছিল। প্রসূতি দুইজনের অবস্থাই খারাপ ছিল। সব কিছু মিলিয়ে যে কী অবস্থা পার করছি আল্লাহ ভালো জানেন। শেষে মোবাইল ফোনের টর্চের আলোর সহায়তায় দুইজন মা ও শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো আছেন।

হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষের জন্য মা-মনি প্রজেক্ট ছিল আশীর্বাদ। মা মনির পর নতুন করে ইউএনএফপিএর সাপোর্ট নিয়ে আবার চালু হয় প্রসূতি মায়ের সেবা। সেটার মাধ্যমে আমাদের মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। এ ছাড়া বিনামূল্যে সিজার অপারেশন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে হাতিয়ার জন্য ইউএনএফপিএর সাপোর্ট বিশাল আশীর্বাদ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ না থাকা সত্ত্বেও মোবাইল ফোনের আলো দিয়ে নরমাল ডেলিভারিতে দুই নবজাতকের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে দুই মা ও নবজাতক উভয়েই সুস্থ আছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেঘনা ব্যাংকের এমডি হলেন সৈয়দ মিজানুর রহমান 

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল

নদীতে ডুবে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত

শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, অভিযুক্তকে যে শাস্তি দিল এলাকাবাসী

কার্টনের ভেতর পলিথিনে মোড়ানো খণ্ডিত পা

‘আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে এক টাকা খরচ করব না’

ফিশিং বোটে মিলল ৩৭৫ বস্তা সিমেন্ট, গন্তব্য ছিল মিয়ানমার

ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ 

১০

ফুটবল ও ক্রিকেট, দুই বিশ্বকাপেই খেলবে যেসব দেশ

১১

চুল পড়া আর খুশকির সমস্যা বাড়াচ্ছেন নিজের ৬ অভ্যাসে

১২

তাসফিনের হাত পুনঃসংযোজন এক বিরল সাফল্য : রিজভী

১৩

অভিযানে আটকের পর বহিষ্কৃত যুবদল নেতার মৃত্যু

১৪

নির্বাচনে জনগণই তাদের ভোট পাহারা দেবে : সালাহউদ্দিন আহমদ

১৫

কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান সরকার

১৬

১ যুগের নতুন দিগন্তে কুবিসাস

১৭

তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি : আমীর খসরু 

১৮

দুর্যোগ মোকাবিলায় স্কাউটদের ভূমিকা অনন্য : শিক্ষা উপদেষ্টা

১৯

আইজিপি বাহারুলকে বরখাস্তের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আইনজীবীর চিঠি

২০
X