এবার ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও এশিয়ানসহ নারায়ণগঞ্জের ৩টি মহাসড়কে তেমন কোনো যানজট নেই। তবে সড়কে যাত্রী ও পরিবহনের চাপ রয়েছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন অংশে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে গণপরিবহন আসতে ধীরগতি হচ্ছে। যে কারণে বাস না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের প্রায় এক হাজার সদস্য যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে।
সকাল থেকেই মহাসড়কের আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলোর সামনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে সঠিক সময়ে পরিবহন পাচ্ছেন না যাত্রীরা যার কারণে দীর্ঘ সময়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রবেশমুখ সাইনবোর্ড, মৌচাক, শিমরাইল, চিটাগাং রোড ও মেঘনা টোল প্লাজাসহ সব সড়কে স্বাভাবিকভাবেই যান চলাচল করছে। এ সড়কগুলোতে পশু ও পণ্যবাহী যানবাহনেরও বাড়তি চাপ দেখা গেছে। এদিকে ঢাকা-সিলেট ও এশিয়ান মহাসড়কের কিছু অংশে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে শিমরাইল, মদনপুর, মোগরাপাড়াসহ মেঘনা পর্যন্ত যানজট এড়াতে ইউটার্ন, ইউলুপসহ আলাদা লেন নির্মাণ করায় পূর্বে যেখানে যানজট হতো এবার তেমন নেই।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ সড়কের কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের পুরিন্দাবাজার পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে স্ট্যান্ড ও চার লেন উন্নতি করণ প্রকল্পের কাজের জন্য যাত্রামুড়া, বরাব, রূপসী, তারাব ও বরপা এলাকায় থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এ সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপও রয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে ধীন গতিতে যানবাহন চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক শরফুদ্দিন আহাম্মদ জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দুটি মহাসড়ক হয়ে পশুবাহী ট্রাকসহ যাত্রীবাহী দূরপাল্লার যানবাহনগুলোর গতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। তিনি জানান, ঈদযাত্রায় আজ মানুষের চাপ বেশি থাকায় গাড়ির চাপ রয়েছে কয়েকগুণ। মহাসড়কে তেমন যানজট নেই। ঢাকার অংশের যানজটের কারণে গাড়ি আসতে ধীরগতি হচ্ছে। ফলে কিছু জায়গায় ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে; তবে পুলিশ দ্রুত সেসব এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে ঢাকায় যানজটের কারণে সঠিক সময়ে গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষ।
সাইনবোর্ড এলাকায় চট্টগ্রামের যাত্রী আক্কাস আলী বলেন, দেড় দুই ঘণ্টা পর পর একটি গাড়ি আসছে। গাড়ির জন্য দীর্ঘসময় পরিবার নিয়ে কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। মহাসড়কের এই অংশে যানজট নেই তবে ঢাকায় যানজট রয়েছে। যার কারণে ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে।
ঈদে পরিবারের সঙ্গে চাঁদপুর যাচ্ছেন নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, মহাসড়কে এবার তেমন ভোগান্তি নেই। কিন্তু গাড়ির চাপ থাকলেও গাড়ির জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছে গণপরিবহনের লোকজন।
আব্দুল মালেক নামে সৌদিয়া পরিবহন কাউন্টারের কর্মচারী বলেন, মহাসড়কে যাত্রী আছে এবং গাড়ির চাপও রয়েছে। কিন্তু ঢাকার যানজটের জন্য গাড়ি নির্ধারিত সময় আসতে পারছে না এবং গন্তব্যে যেতে পারছে না।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগটি অস্বীকার করে তিনি বলেন, নির্ধারিত স্বাভাবিক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কোনো বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুক হক বলেন, যাত্রীদের হয়রানি ও বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে। যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ঈদে ঘর মুখো মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি যেতে পারে সেজন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন