বাগেরহাটে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। প্রতিটি হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় থাকলেও, কেনাবেচা কম। পশুর দাম নিয়েও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ক্রেতারা বলছেন, গেল বছরের থেকে প্রতিটি গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
অপরদিকে খামারি ও বিক্রেতারা বলছেন, গো-খাদ্যের দাম বেশি থাকায় অতিরিক্ত দামে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বেশি দামে ক্রয় করার পরেও লোকসান হচ্ছে বলে দাবি খামারিদের।
শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা পশুর হাটে ৮ সহস্রাধিক গরু ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। তবে ক্রয়-বিক্রয় ছিল অপেক্ষাকৃত কম। ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন শেষ সময়ের জন্য।
গরু ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া মহিবুল হক নামের এক ব্যক্তি বলেন, ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে লাল রঙের একটি বড় গরু কিনলাম। কিন্তু মনে হচ্ছে, গেল বারের থেকে দাম অনেক বেশি।
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, গোখাদ্যের দাম বেশি থাকায় গরুর দাম চড়া। যার কারণে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুণতে হবে।
তেরখাদা থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, ৮টি গরু নিয়ে আসছিলাম। একটি বিক্রি করেছি, কিন্তু তেমন লাভ হয়নি। এখনো ৭টি আছে, অপেক্ষা করছি। আজকে না হলে, ঈদের আগে লোকসান হলেও ছেড়ে দিতে হবে।
কবির হোসেন নামের এক খামারি বলেন, ভুষি, খৈল, পালিশ, ভুট্টা ও গরুর বিভিন্ন ওষুদের প্রচুর দাম। এখন এমন অবস্থা, গেল বারের থেকে ১০-২০ হাজার টাকা বেশি না বেচলে চালান বাঁচবে না। গরুর পাশাপাশি এই হাটে ছাগল ও মহিষও আনা হয়েছে বিক্রির জন্য।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার বাগেরহাটে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থায়ী-অস্থায়ী ২৩টি পশুর হাট বসেছে। প্রকৃতপক্ষে হাটের সংখ্যা ৩০টির বেশি। এসব হাটে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আড়াই শতাংশ খাজনা নেওয়ার কথা থাকলেও, ইজারাদারদের বিরুদ্ধে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিগুণ খাজনা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেব আলী বলেন, এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১ লাখ ১২ হাজার ৪১৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ১০ হাজার বেশি। এসব গরু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য স্থায়ী অস্থায়ী ২৩টি পশুর হাট বসেছে। এর পাশাপাশি অনলাইনে ও খামার থেকে সরাসরি পশু বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অনলাইনে বেঁচা-বিক্রিতে তেমন সাড়া নেই।
মন্তব্য করুন