পুলিশ কনস্টেবল শামীম হত্যা মামলায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। যার মাধ্যমে ঘটনার আট বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকার অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিলকিস আক্তার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এ অভিযোগ গঠন করেন। আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি জানিয়েছেন।
অপর আসামিরা হলেন বিএনপির কর্মী আব্দুস সাত্তার, শাহ আলম, আনোয়ার হোসেন টিপু আলফাজ ওরফে এলাইস আব্বাস ও রফিক। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি রাজধানীর রমনা মডেল থানাধীন এলাকায় বিএনপি জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ককটেল বোমাসহ মিছিল করে। এ সময় পুলিশ বাসে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পুলিশ কনেস্টেবল শামীম মারা যান। এ ঘটনায় ১৮ জানুয়ারি উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আলী আক্কাছ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, আসামি আনোয়ার হোসেন টিপু ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য এবং আসামি মোহাম্মদ হোসেন নিউমার্কেট থানাধীন ১৮ ওয়ার্ডের সভাপতি হওয়ার জন্য এবং আসামি সাত্তার নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার জন্য ২০ দলীয় জোটের অবরোধ হল বেগবান করার উদ্দেশ্যে দলের হাই কমান্ডের কাছে অবস্থান সুসংহত করতে বিভিন্ন প্রকার নাশকতার পরিকল্পনা করে।
তারই ধারাবাহিকতায় তাদের কর্মসূচির মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য পুলিশের ওপর আক্রমণ করে গাড়ি পোড়ানোসহ বিভিন্ন প্রকার সহিংসতা শুরু করে।
যার ফলে ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি হোসেন, সাত্তার, রফিক ও আলফাজ চারজন শাহবাগে একত্রিত হয়। সেখানে চা পান করে তারা শিশু পার্কের দিকে হাঁটতে থাকে। পার্কের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর আসামি হোসেন ও সাত্তার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের দিকে হাঁটতে থাকে। তাদের দেখে আসামি রফিক ও আল একই দিকে হাঁটতে থাকে। রমনা পার্কের রমনা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বসে পরিকল্পনা করে সাত্তার সেখানে টিপুকে আসতে বলেন। আলোচনার সময় টিপু ও শাহ আলম মোটরসাইকেলে সেখানে আসেন। তখন শপিং ব্যাগ নিয়ে টিপু বসে ছিল এবং শাহআলম মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল।
আসামি কিগো মোটরসাইকেল নেমে তাদের চারজনের সঙ্গে কথা বলার ৫ থেকে ১০ মিনিট পর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের নুরুজ্জামান জনি সেখানে আসে।
তারপর আলফাজ ও শাহ আলমকে বাইরে রেখে অপর পাঁচজন আলোচনা করে। গাড়ি পোড়ানো ও বিস্ফোরণে কাজের ব্যয়ের জন্য আসামি হোসেনকে সরবরাহ করতে বললে সে রাজি হয়। আলোচনার পর আসামি টিপু ব্যাগ থেকে বোমা বের করে রফিকের কাছে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশের গাড়ি আসলে আসামি ছত্তর সংকেত দেয়। আসামি টিপু, নুরুজ্জামান ও রফিককে সিগনাল দিলে প্রথম টিপু পরপর দুটি পেট্রলবোমা পুলিশের গাড়ির সামনের গেটের ভিতরে মারে এবং রফিক ৩/৪ ককটেল বোমা গাড়িতে মারে৷ এরপর তারা পালিয়ে যায়।
মন্তব্য করুন