চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বড়ঘোনার এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃক ড্রেজিং বন্ধ, ব্রেকওয়াটার (পাথর ফেলে সাগরে জেটি নির্মাণের) সরানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। একই সঙ্গে এস আলম গ্রুপের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে এ জেটিঘাটে জেলেদের জীবিকার যে ক্ষতি হচ্ছে তার ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাঁশখালীর গন্ডামারা বরগুনা বহুমুখী সমবায় সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এ রিট করেন।
রিটে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ সাইফুল আলম, এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসারসহ মোট ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হবে বলে জানান রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মাদ ফারুক হোসেন।
জানা গেছে, এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জেলেদের কর্মব্যস্ততার প্রাণকেন্দ্র। প্রায় সময় এ জেটিঘাট থেকে তিন হাজারেরও বেশি জেলে নৌকা ও সাম্পান নিয়ে গভীর সাগরে মাছ আহরণে যান এবং জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সম্প্রতি এস আলম গ্রুপের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে এ জেটিঘাটে জেলেদের জীবিকা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জাহাজের ধাক্কায় জাল ছিঁড়ে যাওয়া, রাতের আঁধারে সাম্পানে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটার মতো ঘটনাও নিত্যদিনের হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয় জেলেরা।
এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি গন্ডামারা পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা। বিক্ষোভ প্রতিবাদে অংশ নেওয়া জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, জেটিঘাট থেকে মাছ ধরতে প্রতিদিন ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফেরার সময় প্রকল্পের লোকজন মাছ দাবি করে, না দিলে নৌকা ভিড়তে দেওয়া হয় না। এতে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে। এ ছাড়া ইলিশ মৌসুমে চার মাসব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভরসা এই ঘাট। কিন্তু নানা বাধার কারণে এখন এ অঞ্চলের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটে পড়ছে।
জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পের কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই অবিলম্বে নৌকা ও সাম্পান নিরাপদে জেটিতে ভিড়ার নিশ্চয়তা প্রদান এবং স্থানীয়দের জন্য এস আলম গ্রুপে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।
মন্তব্য করুন