অর্থ আত্মসাৎ মামলায় অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের এমডি মো. আসাদুল ইসলাম এবং পরিচালক মো. আমির হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
গত ৩০ জানুয়ারি আদালত এ পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে উচ্চ আদালত চত্বরে মামলার বাদী আমিনুলকে মারধর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন মামলার বাদী।
বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, ‘মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সের কর্ণধার আমিনুল ইসলাম একজন পাথর ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বেশকিছু মেগা প্রকল্পে পাথর সরবরাহ করে আসছেন। আর আসাদুল ইসলাম ও আমির হোসাইন দুজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ২০১৮ সালের জুন মাসে তিনজন যৌথভাবে বিদেশ থেকে পাথর আমদানির ব্যবসা শুরু করেন। চুক্তি অনুযায়ী কে কতটুকু লভ্যাংশ পাবেন সেটাও লিখিত করা হয়। ব্যবসা শুরু করতে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম প্রথমে ১২ কোটি তিন লাখ এবং পরবর্তীতে আরও দুই কোটি পৃথক দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন। এ সময় আরও সাতটি চেকের পাতা তার কাছ থেকে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পাথর আমদানি না করা হলে আমিনুল ইসলাম তাদের কাছে টাকা ও চেক ফেরত চান।
কিন্তু অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের দুই কর্মকর্তা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাদের আচরণে সন্দেহ হলে আমিনুল ইসলাম ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যৌথ অ্যাকাউন্ট হলেও তার অজান্তেই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন তাদের কাছে ধরনা দিলেও টাকা ফেরত পাননি। সবশেষ তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে। দীর্ঘ তদন্তের পর গত বছরের শেষদিকে সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল করে।
এরপর গত বছরের শেষ দিকে মামলার তদন্ত শেষে ‘অ্যাসরোটেক্স গ্রুপে’র এমডি ও পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় সিআইডি। তাতে বলা হয়, পাথর আমদানির ব্যবসায়িক পার্টনার হয়ে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম দুই দফায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের অ্যাকাউন্টে জমা দেন। যা যৌথ অ্যাকাউন্ট হলেও প্রতিষ্ঠানের এমডি ও পরিচালক জালিয়াতি মাধ্যমে টাকাগুলো তুলে আত্মসাৎ করেন; সিআইডির ফরেনসিকে এমন প্রমাণ মিলেছে।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্টে পাথর সাপ্লাই দিয়ে আসছিলাম। অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের এমডি ও পরিচালকের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত হওয়ার পর তারা আমার বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। বর্তমানে আর্থিক সংকটে পরিবার নিয়ে হতাশায় ভুগছি। আমিনুল বলেন, ‘ওই দুজনের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছি তা প্রত্যাহার করে নিতে আমাকে অনবরত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আমি হাইকোর্টে গেলে, সেখানে আমার ওপর হামলা করে আসামি আসাদুল ইসলাম। লোকজন নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। মারধরের শিকার হয়ে একজন আইনজীবীর রুমে গিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষা করি। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।
এ বিষয়ে ওই সাধারণ ডায়েরির তদন্তের দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার এসআই আরাফাত ইবনে সফিউল্লাহ কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি এখনো ভালোভাবে দেখেনি। তাই বিস্তারিত বলতে পারব না। তবে ঘটনা যাই হোক, আমরা সুষ্ঠু তদন্তই করব।
মন্তব্য করুন