ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ফেলানী হত্যা দিবসে ঢাবিতে ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন’র আত্মপ্রকাশ

‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। ছবি : কালবেলা
‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। ছবি : কালবেলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন’ নামে নতুন একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রতিরক্ষা, স্বনির্ভরতা এবং জাতীয় স্বার্থকে মূলনীতি হিসেবে ধরে এ সংগঠনটি কাজ করবে বলে জানান সংগঠকরা।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ফেলানী হত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় এ সংগঠনের।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মৃতিকে প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে সংগঠনটি।

প্রাথমিকভাবে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করে এ সংগঠন। এতে আহ্বায়ক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ওয়ালী উল্লাহ, সদস্যসচিব হিসেবে সরকারি বাঙলা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলামিন আটিয়া এবং মুখপাত্র হিসেবে সাধারণ আলেম সমাজের সাবেক আহ্বায়ক মুফতি রিদওয়ান হাসানকে রাখা হয়েছে।

সদস্য সচিব আলামিন আটিয়া জানান, শুধু ফেলানী নয়, অন্যান্য সীমান্ত নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের শহীদি মর্যাদার জন্য কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।

সংগঠনটির ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদা বারবার নানা ধরনের আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক আধিপত্যবাদ, অর্থনৈতিক শোষণ, সাংস্কৃতিক দখলদারিত্ব এবং সীমান্তে অমানবিক হত্যাকাণ্ড আমাদের জাতিকে বারবার রক্তাক্ত করেছে। এসব আঘাত আমাদের স্বপ্নময় ভবিষ্যতের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক নির্মমভাবে কিশোরী ফেলানী খাতুনকে হত্যা করা হয়। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা তার নিথর দেহের ছবি আমাদের জাতিকে চিরদিনের জন্য লজ্জিত ও ব্যথিত করে রেখেছে। আজও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, যা আমাদের জাতীয় আত্মমর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের ওপর এক গুরুতর আঘাত।

ফেলানী হত্যাকাণ্ড আমাদের জন্য এক প্রতীক। এটি সীমান্ত হত্যার নিষ্ঠুর বাস্তবতা এবং আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর চলমান আগ্রাসনের উদাহরণ। এর মধ্য দিয়ে আমরা উপলব্ধি করেছি, শুধু প্রতিবাদ নয়, আমাদের একটি সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি।

এতে সংগঠনটির লক্ষ্য ও অঙ্গীকার হিসেবে নিজেদের ৫ দফা উল্লেখ করা হয়।

সেগুলো হলো- সীমান্ত হত্যার অবসান : সীমান্তে প্রতিটি হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করা এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ। রাজনৈতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান : যে কোনো ধরনের বিদেশি রাজনৈতিক প্রভাব ও হস্তক্ষেপ বন্ধ করা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে সব দলের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা। অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই : বৈষম্যমূলক বাণিজ্যচুক্তি, অন্যায্য ঋণ ও প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা প্রতিহত করা। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদ : আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্যকে রক্ষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মোকাবিলা করা। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি রচনা : সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা।

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর স্মৃতিকে প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে আমরা ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই আন্দোলন হবে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মঞ্চ। দেশের প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, আমাদের এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করবেন- এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমরা কখনো পিছপা হব না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যে ৮ ধরনের মানুষের জন্য কফি খাওয়া বিপদজনক

নির্বাচন নিয়ে কনফিউশনে দুই তথাকথিত সিনিয়র সাংবাদিক : প্রেস সচিব

বজ্রপাত প্রতিরোধে ২০০ তালের চারা রোপণ করল পুলিশ 

জামায়াত আমিরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে গেলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা

আরব আমিরাতে ২৫ বন্দির মুক্তির বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

হত্যার পর মা-বাবাকে ঘরের ভেতরে পুঁতে রাখেন ছেলে

শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ

শাবিপ্রবির ২৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

পরকীয়া সন্দেহে গলা কেটে স্ত্রীকে হত্যা

১০

গরু ছাড়াই ঘানি টানা সেই প্রবীণ দম্পতির পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

১১

দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল

১২

টাইফয়েডের টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও জীবনরক্ষাকারী : সিভিল সার্জন

১৩

স্বর্ণের পর রুপার দামেও নতুন ইতিহাস

১৪

সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা

১৫

যে সমীকরণ মিললে তিন ম্যাচ হেরেও সেমিফাইনালে উঠতে পারে পাকিস্তান

১৬

৪৯তম বিসিএসের প্রবেশপত্র নিয়ে পিএসসির জরুরি নির্দেশনা

১৭

ফাঁদ দিয়ে বক শিকার, যুবকের কারাদণ্ড

১৮

ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলেন মা

১৯

পাঁচ ইসলামী ব্যাংক এক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ

২০
X