রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে এক নারী শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে যৌন হয়রানি ও অশ্লীল আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি এবং স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
গত ৪ আগস্ট বিভাগে অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যক্তিগত কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ন্যায়বিচার চেয়ে ১৩ আগস্ট বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা। এ বিষয়ে তদন্ত করতে বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিভাগের সভাপতি।
অভিযুক্ত শিক্ষক ড. প্রভাস কুমার কর্মকার। তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সাবেক প্রশাসক। ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী একই বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী সালমান সাব্বির বলেন, অধ্যাপক প্রভাস কুমার ভুক্তভোগী ছাত্রীকে তার চেম্বারে ডেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। মূলত ক্লাসের উপস্থিতির (অ্যাটেনডেন্স) শতাংশ জানতে ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকের চেম্বারে যায়। তখন শিক্ষক তাকে অন্যদিন ফোন দিয়ে আসতে বলেন। পরবর্তীতে সে গেলে সাজেশনের কথা বলে পরীক্ষার প্রশ্ন দেন এবং ছবি তুলতে নিষেধ করে শুধু খাতায় লিখতে বলেন। এরপর শিক্ষক তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অশোভনভাবে স্পর্শ করেন এবং কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দেন। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে এবং তাকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিতে হয়েছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে পরিবারও মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছে।
অন্য এক শিক্ষার্থী তানজিনা খান বলেন, এখানে শুধু একজন ভুক্তভোগী নয়, এর আগে ভুক্তভোগী ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকতে পারে। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান। এই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই। যেহেতু তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকারকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে বিভাগ থেকে তদন্তের জন্য একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আজ সেই রিপোর্ট আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। যাচাই-বাছাই করে তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
মন্তব্য করুন