নামের মিল থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ ও কবি জসীমউদদীন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি এস এম ফরহাদ হোসাইন এক ব্যক্তি নন।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক ভিডিও বার্তায় ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে মুখ খুলেছেন ফরহাদ হোসাইন।
ভিডিও বার্তায় ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আসসালামুলাইকুম। আমি এস এম ফরহাদ হোসাইন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদদীন হলের ২০২৬-১৭ সেশনের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। বেশ কিছু গণমাধ্যম ও অনেকে আমাকে ফোন এবং ফেসবুকে মেনশন দিচ্ছেন, ছাত্রশিবিরের এস এম ফরহাদ ও আমি এক ব্যক্তি কি না এটা জানার জন্য। ব্যাপারটা নিয়ে কিছু মিস পারফেকশন সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বেশকিছু মূল ধারার গণমাধ্যমেও। ব্যাপারটা আমার ক্লিয়ার করা উচিত।’
তিনি বলেন, আমি ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে আমার ফেসবুক পোস্টে কনফিউশন ক্লিয়ার করি। ছাত্রশিবিরের ফরহাদ ও আমি ব্যক্তি এক নয়। আমার বাসা সাতক্ষীরা, ওর বাসা চট্টগ্রামে। আমি ২০১৬-১৭ ব্যাচের ছাত্র, সে ২০১৭-১৮ সেশনের ছাত্র। আমার বিভাগ ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য। ওর বিভাগ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। ও আমার জুনিয়র এবং হলের ছাত্র। ব্যাপারটা অনেকে গুলিয়ে ফেলছেন। আমরা এক ব্যক্তি নই।
ভিডিও বার্তায় এসএম ফরহাদ হোসাইন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রলীগের প্যাডে যে ফরহাদকে দেখানো হচ্ছে সহসভাপতি, সে ছাত্রশিবিরের ফরহাদ নয়। ওটা আমার। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যে গণঅভ্যুথান হয়েছে, সে সময় ১৪ জুলাই আমরা যারা ছাত্রলীগের প্যাডে ছিলাম সবাই বিদ্রোহী হয়ে একযোগে পদত্যাগ করি এবং একই দিন আমরা আন্দোলন করি। সেখানে আমরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ বলে ক্যাম্পাসে প্রদক্ষিণ করি। এ ছাড়া রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে।
তিনি আরও বলেন, ওইদিন রাত ৩টায় সময় আমি হলে ফিরি। পরে ১৫, ১৬ ও ১৭ তারিখে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত দ্বারা হামলা হয়েছিল। এরপর ১৭ তারিখে ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আমি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। ব্যাপারটা হচ্ছে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও ছাত্রলীগের সহসভাপতির ব্যাপারটা আমার সঙ্গে। ছাত্রশিবিরের ফরহাদের সঙ্গে নয়। বিষয়টি আগেও বলেছি।
‘ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি রিট হয়েছে ফরহাদের বিরুদ্ধে। সেটা হতে পারে। যে কোনো মানুষ সেটা (রিট) করতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তি আমার সঙ্গে তার মিশিয়ে ফেলা কিংবা তার সঙ্গে অন্যকে মিশিয়ে ফেলে কিছু করা মনে হয় সুখকর কিছু নয়। আমি ব্যক্তি ফরহাদ আর ওই ফরহাদ এক নয়। এটাই হচ্ছে আসল কথা। প্রত্যাশা থাকবে যে কোনো বিষয়ে সুষ্ঠু এবং সুন্দর সমাধান হোক।’
সবশেষে তিনি বলেন, আমার জসীমউদদীন হলের ভিপি প্রার্থী হলেন আবিদ ভাই। আমাদের হলের ভাই। আমার ইমিডিয়েট সিনিয়র। উনিসহ এস এম ফরহাদের জন্য শুভকামনা থাকবে। সাদিক আমার কাছের বন্ধু। সবার জন্য শুভকামনা। ছাত্ররা যাকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে মনে করবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব ছাত্ররা তাদের হাতে অর্পণ করবেন। ডাকসু নির্বাচনের জন্য শুভকামনা।
এর আগে, গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর দেওয়া ফেসবুক পোস্টে ছাত্রলীগের ফরহাদ লেখেন, যেহেতু আমার নামের সাথে আমার ছোট ভাই এস এম ফরহাদের নামের মিল আছে। তাই অনেকেই কনফিউশনে আছেন। সেজন্য আমার অবস্থান ক্লিয়ার করছি। আমার নাম এস এম ফরহাদ হোসাইন- সেশন-২০১৬-১৭, বিভাগ- ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য, বাড়ি- সাতক্ষীরা। আর আমার হলের ছোট ভাইয়ের নাম- এস এম ফরহাদ, সেশন-২০১৭-১৮, বিভাগ- সমাজকল্যাণ, বাড়ি- চট্টগ্রাম।
তিনি আরও লেখেন, ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারি আমার হলের ছোট ভাই, অমায়িক ছেলে। হল ডিবেটিং ক্লাবের জুনিয়র। ছোট ভাইয়ের জন্য অনিঃশেষ শুভকামনা।
মন্তব্য করুন