

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ উপলক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’।
১২ মাসের মধ্যে ২১টি সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে ভিপি প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলামের মাধ্যমে ইশতেহার পাঠের সূচনা হয়। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরা পর্যায়ক্রমে পুরো ইশতেহার ঘোষণা করেন।
২১ দফা ইশতেহারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো—স্বপ্নের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন, আবাসন সংকট নিরসন, বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ, বিশ্বমানের শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা প্রসার, শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি ও সেমিনার, ক্যাম্পাস কমিউনিটির স্বাস্থ্যসেবা, নারীর জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ছাত্রী হলের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও টিএসসির আধুনিকায়ন, পরিবহন সেবা সম্প্রসারণ, খেলাধুলা ও শরীরচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই বিপ্লব ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা সংরক্ষণ, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, আইনি সেবা ও মানবাধিকার সুরক্ষা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা, ক্যারিয়ার লঞ্চপ্যাড এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংগঠন ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা।
ইশতেহারে প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয়—দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, আবাসন সংকট নিরসন, বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও আধুনিকায়ন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। র্যাগিং, সাইবার বুলিং, মাদক এবং সকল ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের কথা বলা হয়।
শিক্ষার মানোন্নয়নে আউটপুট বেজড এডুকেশন (OBE) কারিকুলাম বাস্তবায়ন, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণ, পেপারলেস প্রশাসন চালু এবং পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে দেখার ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে স্কলারশিপ, রিসার্চ ফেস্ট, সেমিনার এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম জোরদারের কথা উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা অ্যাপ, নারী নিরাপত্তা সেল, ব্রেস্টফিডিং কর্নার, ডে-কেয়ার সেন্টার এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, আবাসন এবং এক্সেসিবল ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকারও করা হয়।
ইশতেহারে আরও বলা হয়—ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, পরিবহন সেবা সম্প্রসারণ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম জোরদার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সুরক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার উন্নয়নে জব ফেয়ার, স্টার্টআপ সামিট ও পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অংশ হিসেবে জকসুর মাসিক কার্যক্রম অনলাইনে প্রকাশ এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের অঙ্গীকার করা হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও শিবির সমর্থিত প্যানেল ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’-এর জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা ও প্রত্যাশাগুলো ইশতেহারে তুলে ধরেছি। ১২ মাসের মধ্যে ২১ দফা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও ভিপি পদপ্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজনীতি নয়, নীতি ও ন্যায়ের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীবান্ধব ঐক্য গড়ে তুলতে চাই। নির্বাচিত হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ইশতেহারের প্রতিটি অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করব।’
মন্তব্য করুন