

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘বুইস্যা বাহিনী’র প্রধান শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যাকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে বিশেষ এক অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযান সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে বুইস্যার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। অভিযানের সময় তার হেফাজত থেকে দেশীয় ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। এই অভিযানে বুইস্যার চলাচল ও কার্যক্রম সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে।
সিএমপি জানায়, শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা দীর্ঘদিন ধরে চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও বহদ্দারহাট এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অন্তত ২০টির বেশি মামলা রয়েছে, যার একটি বড়ো অংশ বর্তমানে বিচারাধীন। এসব মামলার মধ্যে একাধিক গুরুতর অস্ত্র ও মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহদ্দারহাট ফিনলে স্কয়ার শপিং মলের পাশের খালপাড় ও আশপাশের এলাকা দীর্ঘদিন ধরে বুইস্যার প্রভাববলয়ে ছিল। ওই এলাকায় মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্রের লেনদেন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম তার নির্দেশেই পরিচালিত হত। তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে নিয়মিত ভয়ভীতি ও অস্ত্র প্রদর্শন করত। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটকে বুইস্যা বাহিনী ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করত। সেখানে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানো ব্যক্তি ও প্রতিপক্ষদের আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার ঘটনায়ও বুইস্যা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার কারণে চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকার সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন।
এদিকে, সন্ত্রাসী বুইস্যা গ্রেপ্তারের ঘটনায় রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় র্যাব-৭-এর মিডিয়া সেন্টার চান্দগাঁও ক্যাম্পে (বহদ্দারহাট) এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিফিংয়ে র্যাব-৭ পতেঙ্গার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক স্কোয়াড্রান লিডার মো. মিজানুর রহমান অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
উল্লেখ্য, চুরি ও ছিনতাই দিয়ে অপরাধজগতে প্রবেশ করা বুইস্যা পরবর্তীতে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। পুলিশের একাধিক জরিপ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম নগরের সক্রিয় কিশোর গ্যাংগুলোর পৃষ্ঠপোষকদের তালিকায় তার নাম উঠে এসেছে।
মন্তব্য করুন