

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার পর মরদেহের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে খালে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ (বিপিএম)।
তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরকীয়া সম্পর্ককে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের বিরোধই মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৬ ডিসেম্বর সকালে আড়াইহাজার থানার শ্রীনিবাসদী এলাকার একটি বালুর মাঠসংলগ্ন স্থান থেকে মাথাবিহীন এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ফিঙারপ্রিন্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। নিহত যুবকের নাম আবরাহাম খান (২৭)। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা ওয়াজেদ আলী খান আড়াইহাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট। তদন্তের ধারাবাহিকতায় গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে আসামি রুহুল আমিনকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়িও রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়।
পিবিআই সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার রুহুল আমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তে উঠে আসে, নিহত আবরাহাম খানের সঙ্গে রুহুল আমিনের খালার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে প্রকাশ পেলে আবরাহাম খান তাকে ব্ল্যাকমেইল করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর জেরেই প্রতিশোধ নিতে রুহুল আমিন তার খালা ও আরও কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ১৫ ডিসেম্বর সকালে রুহুল আমিনের খালার প্ররোচনায় আবরাহাম খানকে রাজবাড়ীর পাংশা থেকে আড়াইহাজারে নিয়ে আসা হয়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহের মাথা আলাদা করে জামাকাপড় খুলে নেওয়া হয় এবং মাথা ও হত্যায় ব্যবহৃত দা একটি ব্যাগে ভরে পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়।
১৮ ডিসেম্বর স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ খাল থেকে নিহতের খণ্ডিত মাথা, ব্যবহৃত দা ও একটি জ্যাকেটের অংশ উদ্ধার করে।
পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। গ্রেপ্তার আসামিকে শনিবার আদালতে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামি, বিশেষ করে রুহুল আমিনের খালাসহ অজ্ঞাতদের গ্রেপ্তার ও শনাক্তে অভিযান অব্যাহত।
মন্তব্য করুন