শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পাঁচটি হল রয়েছে। প্রতিটি হলের পানি বিশুদ্ধকরণে মাসে খরচ হতো ২৫ হাজার টাকা। তবে বর্তমানে আয়রনের মাত্রা কমে যাওয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণে প্রতি হলে মাত্র সাত হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের ৯টি স্থানের পানি পরীক্ষা করে আটটি স্থানে অতিরিক্ত মাত্রায় আয়রন পাওয়া গেছে। এক স্থানের পানিকে নিরাপদ বলছেন গবেষকরা।
শাবিপ্রবি গবেষণাকেন্দ্রের অর্থায়নে পেট্রোলিয়াম ও খনিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে গবেষণা পরিচালনা করা হয়। গবেষণা দলটিতে সহকারী হিসেবে ছিলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী সাইদুজ্জামান চৌধুরী। সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল ও ইনোভেটিভ এক্সপ্লোরেশন মেথডস ফর মিনারেল ওয়েল, গ্যাস এন্ড গ্রাউন্ড ওয়াটার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বইয়ের একটি অধ্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে।
জিওফিজিক্যাল ইলেকট্রিক্যাল রেসিসটিভিটি সার্ভের (ভার্টিক্যাল ইলেকটিক্যাল সাউন্ডিং) মাধ্যমে এ পানি পরীক্ষা করা হয়।
যে জায়গাগুলোর মধ্যে মিলিগ্রাম/লিটার এককে সহনশীল মাত্রা ০.৮১ আয়রন পাওয়া যায় যথাক্রমে সৈয়দ মুজতবা আলী হলসংলগ্ন টিলারগাঁওয়ে। এর বাইরে একাডেমিক ভবন-ডি তে ১.২২, আইআইসিটি ভবনে ১.৩৪, আবাসিক এলাকা লন্ডনী বাড়িতে ১.৪১. শিক্ষকদের ডরমিটরিতে ২.১৪, শহীদ মিনারে ২.৭২, বাসের গ্যারেজে ২,৮২, শাহপরান হলে ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ৯ মিলিগ্রাম/লিটার আয়রন পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং দা এনভায়রনমেন্ট কনসারভেশনের নিয়ম অনুযায়ী, ‘পানির আদর্শিক আয়রনের মান ০.৩ থেকে ১.০ মিলিগ্রাম/লিটার।’
১.২২ থেকে ২.৮২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত আয়রনযুক্ত পানি বোতলের ভেতর এক বছরের বেশি সময় সংরক্ষণ করে কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। ফলে এসব স্থানের আয়রনের পরিমাণ যাচাই করতে পুনরায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী এ জায়গাগুলোতে আয়রন ব্যতীত পানির পিএইচ, টারভিডিটি, কনডাক্টিভিটি, টিডিএস, টিএস, ডিও, আর্সেনিক ও পিউরিফাই প্লান্ট বসানো হবে।
তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় খনিজ লবণ সহনশীল মাত্রায় রয়েছে। ফলে এই এলাকাগুলো থেকে খুব সহজে নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে পারবে কিনা তা গবেষকদল যাচাই করে দেখছে।
গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপদ স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করলে তা সরাসরি। পান করা যাবে। কোনো বাড়তি খরচ করতে হবে না। আর কম আয়রনের উৎস থেকে পানি সরবরাহ করলে ফিল্টারিং বাবদ খরচ কমে যাবে।’
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কবির হোসেন বলেন, ‘গবেষণা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য জায়গাগুলোতেও ওয়াটার পিউরিফাই প্লান্ট বসানো হবে।’
মন্তব্য করুন