নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মেরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীর কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।
গত ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এদিকে এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে শনিবার (২৫ নভেম্বর) প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এনামুল হক ইমন নামের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মিনহাজুল হক রুমন লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের কর্মী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর রাত ৭টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে জিয়া মোড় এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন ইমন। এ সময় ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বদরুল আমিন পিয়াস তাকে বাইক থামাতে বলেন। তার সাথে কথা বলে বাইক নিয়ে একটু সামনে আগাতেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পেছন থেকে দৌড়ে এসে হামলা চালায় অভিযুক্ত রুমন ও তার সহযোগীরা। এতে বাম কানে প্রচণ্ড আঘাত পায় ইমন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে গেলে তাকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বলেন দায়িত্বরত চিকিৎসক রবিউল ইসলাম । এতেও ঠিক না হওয়ায় নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞকে দেখানোর পরামর্শ দেন তিনি। পরে কুষ্টিয়ায় ডা. এম এ মান্নানকে দেখানো হলে কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে নিশ্চিত করেন এবং অপারেশন করা না হলে ঠিক হবে না বলে জানান তিনি। লিখিত অভিযোগে এ ঘটনার বিচার ও অপারেশনের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী ইমন বলেন, ওখানে আমার কোনো দোষ ছিল না। হঠাৎ রুমন ভাই এসে আমাকে মারধর করে। এতে আমার কানের পর্দা ফেটে যায়। আমি আমার অপারেশনের পুরো খরচসহ কর্তৃপক্ষের নিকট দোষীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিনহাজুল হক রুমন বলেন, আসলে ঘটনা কিছুই ঘটেনি। সে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাইক চালাচ্ছিল। বাইক গায়ে লেগে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তাকে শুধু বোঝানো হয়েছিল। তাকে মারা হয়েছে নাকি। আর বিষয়ের তো এক বার মীমাংসা করা হয়েছে।
এ দিকে অভিযুক্ত রুমন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী নয় দাবি করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, রুমনকে আমি চিনি। ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ও একজন সাধারণ শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের সাথে ওর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ও ছাত্রলীগের কোনো ধরনের সক্রিয় কর্মীও না। আমি যতদূর জানি ওরা নিজেরা নিজেরা বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছে এবং অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে নেওয়া হয়েছে বলেও আমি শুনেছি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। পরবর্তী মিটিংয়ে এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় তা আলোচনা করা হবে।
মন্তব্য করুন