কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:২০ এএম
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ০৩:১২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

স্কুল মিলে বৈচিত্র্য ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে

স্কুল মিল বিষয়ে অংশীজনদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরামর্শ সভায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা
স্কুল মিল বিষয়ে অংশীজনদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরামর্শ সভায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা

বিগত দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে খাবারে বৈচিত্র্য আনতে হবে। কারণ, এক খাবার সব বেলায় শিশুদের ভালো লাগে না। সেজন্য সেক্ষেত্রে কলা, পেয়ারা সহ বিভিন্ন দেশি ফল রাখা যায়। আবার দুধ, ডিম ও পুষ্টিকর অন্যান্য খাবারও রাখা যায়। অর্থাৎ, স্কুল ফিডিংয়ে এমন পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে যা শিক্ষার্থীরা মজা করে খাবে, একই সাথে তাদের পুষ্টিও নিশ্চিত করবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের গ্রিন ভিউ সভাকক্ষে স্কুল মিল বিষয়ে অংশীজনদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরামর্শ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি বৃদ্ধি, ঝরে পড়ার প্রবণতা রোধ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার দেশের ১৫০টি উপজেলায় ‘স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচি চালু করছে। এ লক্ষ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণসাক্ষরতা অভিযান।

এতে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণসাক্ষরতা অভিযান এর উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ এবং এডুকেশন ওয়াচের সদস্য মোহম্মদ মহসীন। স্কুল মিল বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা অভিজ্ঞ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, স্কুল মিল কার্যক্রম বাস্তবায়ন পদ্ধতি বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের কাজ কি হবে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। সেটি স্পষ্ট করতে হবে। কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। এছাড়া, অভিভাবকদের এই কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিদেশিদের সাথে তাল না মিলিয়ে সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, স্কুল ফিডিং ব্যবস্থাপনা কীভাবে হবে এটি এখনও স্পষ্ট নয়। এখানে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার বিষয়ে ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন ব্র্যাক, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, এফআইভিডিবি, আরআরএফ, ইএসডিও এবং সুশীলনের প্রতিনিধিরা। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন করেন ইউনিসেফ, ইউনেস্কো, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড, এডুকো, বেইসসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা।

সভায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অংশ নেন। তারা বলেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে অন্য শিক্ষকদের এই কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় শ্রেণিতে পাঠদান ব্যাহত হয়। সে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কাউকে নিয়োগ দিয়ে এই দায়িত্ব দেওয়া যায়। আমরা প্রত্যাশা করি, রান্নাঘরে তৈরি করা খাবার বাচ্চারা পাবে। এতে বাচ্চারা খাবারে মজা পাবে। তাদের বেশি সময় স্কুলে রাখা সম্ভব হবে।

তারা বলেন, ক্লাসের শুরুতে বিস্কুট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে থাকা অবস্থায় একটু পরপর বিস্কুট খেতে পারে। কিন্তু এক বা দুইবারের পর তারা আর বিস্কুট খেতে চায় না। মোটা চালের খিচুড়িও বাচ্চারা সবসময় খেতে চায় না। আবার বিভিন্ন সময় বাজারে সবজির দাম সমান থাকে না। সে কারণে উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন শুকনা খাবার দেওয়া যায়।

স্কুল মিল বাস্তবায়নে শিক্ষকদের না জড়ানোসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে গণসাক্ষরতা অভিযান। সুপারিশগুলো হলো- স্কুল মিল ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা, এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি, স্থানীয় জনগণকে এই কাজে সম্পৃক্ত করা, স্থানভেদে খিচুড়ির পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর অন্যান্য খাবার রাখা, রাঁধুনি নিয়োগ করা, স্কুল পর্যায়ে মিল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা, নিবিড় স্কুল মনিটরিং চলমান রাখা, কমপক্ষে ২-৩ মাস সংরক্ষণ করা যায় এমন খাবার তালিকায় রাখা, শিশুর দৈনিক পুষ্টির ৪০ শতাংশ যাতে পায় এমন খাবার রাখা, স্কুল মিল ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখা ইত্যাদি।

এছাড়া মাদ্রাসা, এনজিও ও বিভিন্ন বেসরকারি বিদ্যালয় গুলোতেও একই উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। কোনও শিশুর মৌলিক অধিকারওে যেন খর্ব না হয় সেদিকে মনোযোগ দেওয়া, খাবারের গুণগত মান এবং মানসম্মত খাবার দেওয়া, নারী ক্ষমতায়নে প্রসার বাড়ানো ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করার সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্কুল মিল বাস্তবায়নের নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়। ডিপিপিতে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ব্যবস্থা যাতে থাকে সে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় সরকারের কাছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার উল্টে নিহত ৩

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২১ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

৪ দিনের সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাড়ল বাস ভাড়া

পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা হবে ক্লিন সিটি : চসিক মেয়র

জুলাই সনদে মিত্রদের ‘কাছাকাছি মতামত’ দেওয়ার পরামর্শ বিএনপির

সন্তানকে বাঁচিয়ে প্রাণ দিলেন বাবা

সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

১০

ইঞ্জিন সংকটে ‘নাজুক’ রেল অপারেশন

১১

স্পেনে রিয়ালের আর্জেন্টাইন তারকাকে নিয়ে অদ্ভুত বিতর্ক

১২

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন আবু তাহের

১৩

মানবিক ড্রাইভার গড়তে নারায়ণগঞ্জে ডিসির যুগান্তকারী উদ্যোগ

১৪

গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

১৫

পিএসসি সদস্য হলেন অধ্যাপক শাহীন চৌধুরী

১৬

রিয়ালের হয়ে ইতিহাস গড়লেন আর্জেন্টিনার ‘মাস্তান’

১৭

দাম্পত্য কলহ এড়ানোর সহজ ৫ উপায়

১৮

‘গণতন্ত্রের জন্য আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হতে পারে’

১৯

আর্থিক খাত নিয়ে খারাপ খবর দিলেন গভর্নর

২০
X