ইডেন মহিলা কলেজের আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনের খাবারে গুণগত মান ও পরিমাণে গুরুতর ঘাটতির অভিযোগ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। রান্না করা খাবারে দুর্গন্ধ, পোকামাকড় এবং অপরিষ্কার উপকরণ থাকার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলেও তারা শঙ্কা করছেন।
এক আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ভাত প্রায়ই শক্ত থাকে, ডাল পানির মতো পাতলা, আর সবজি বা মাছ সঠিকভাবে রান্না হয় না। মাঝে মাঝে এমন গন্ধ থাকে যে খাওয়ার ইচ্ছাই চলে যায়’।
বঙ্গমাতা হলের শিক্ষার্থী লিয়া বলেন, ‘খাবারের মান যেমন খারাপ, দাম তেমনই বেশি। এক টুকরো ছোট মুরগির জন্য ৪০ টাকা নেওয়া হয়। কখনো খাবারে পোকাও পাওয়া যায়। অতিরিক্ত তেল-মসলা ব্যবহারের কারণে অনেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন’।
আরেক শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার সাম্প্রতিক এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, গত পরশু ক্যান্টিন থেকে নাস্তা আনি। রুমমেট খেয়ে বলল, ‘আপু, খাবারে গন্ধ!’ আমি নিজেও খেয়ে দেখি খাবার নষ্ট। ম্যামকে জানালে ক্যান্টিন মামাকে ডেকে নষ্ট খাবার ফেলে দিয়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিবার যদি এমন হয়, সমাধান কোথায়?
শুধু খাবারের মান নয়, পুষ্টিগুণ ও সুষম আহারের ঘাটতিও শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের বড় কারণ। অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বাড়তি খরচে খাবার কিনে খাচ্ছে।
ক্যান্টিন সহকারী মাহফুজ বলেন, গরম বেশি হওয়ার কারণে বুটে গন্ধ উঠেছিল। ক্যান্টিন পরিচালনার জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ পান কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- না, গ্যাস না থাকলে লাকড়ি কিনে নিজের টাকায় চালাতে হয়।
বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বললে, তারা ক্যান্টিন ম্যানেজারকে ডেকে এনে খাবারের মান নিশ্চিত করতে বলেন এবং প্রয়োজনে মেনু কমিয়ে হলেও মান বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
এ বিষয় জানতে চাইলে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন, ‘আগে হলে সুপেয় পানির সমস্যা ছিল, যা এখন সমাধান হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অন্য সমস্যাগুলোর সমাধানেও সচেষ্ট।’
শিক্ষার্থীরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ এবং স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার পেতে পারেন।
মন্তব্য করুন