ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে অব্যাহতি পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ তার ডিন পদ ফিরে পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভাপতিত্ব করেন।
বুধবার (৮ মে) নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, অধ্যাপক রহমত উল্লাহর ব্যাপারে হাইকোর্টের একটা রায় ছিল। সেটা বাস্তবায়নেই সিন্ডিকেট ডিন পদ ফিরিয়ে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রায়ের পর বিশ্ববিদ্যালয় আপিলও করেছিল, কিন্তু তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। এরপর তিনি দুবার উকিল নোটিশ দিয়েছিলেন।
এর আগে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের এক আলোচনা সভায় অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরপরই বক্তব্য দিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সামাদ।
পরের দিন ১৮ এপ্রিল (সোমবার) সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় আমি যদি অজ্ঞতাবশত কোনো শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করে থাকি, তা নিতান্তই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। এ জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এরপর ২০ এপ্রিল এক সিন্ডিকেট সভায় তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তবে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করলে তাকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর নিজেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন খন্দকার মোশতাক।
মন্তব্য করুন