বাংলাদেশের নারী ফুটবল এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের পাতায়। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বাংলাদেশ নারী ফুটবল তাদের নিয়মিত কলামে বড় করে স্থান দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—প্রথমবার এএফসি নারী এশিয়ান কাপে জায়গা করে নেওয়াটা শুধু একটি ক্রীড়া সাফল্য নয়, বরং বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি।
এই দলটিকে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই অধিনায়ক আফিদা খন্দকার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গার্ডিয়ান তাকে বর্ণনা করেছে ‘ফিয়ারলেস অ্যান্ড কনফিডেন্ট’ হিসেবে। আফিদার ভাষায়—আমরা কেবল শুরু করেছি। এই সাফল্য শুধু আমাদের নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের জন্য বার্তা—স্বপ্ন দেখতে হবে, লড়াই করতে হবে।
দুর্দান্ত যোগ্যতা অর্জন
বাংলাদেশ দল বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বে উঠেছে। বাহরাইনকে ৭-০, মিয়ানমারকে ২-১ আর তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে হারিয়ে তারা দেখিয়েছে নিজেদের শক্তি। গার্ডিয়ান লিখেছে, এ সাফল্যের পর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ নারী দল লাফিয়ে উঠেছে ২৪ ধাপ—এটি বিশ্বে এই চক্রে সর্বোচ্চ অগ্রগতি।
মাঠের বাইরেও সংগ্রাম
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত জীবনের চিত্র। অনেকে এখনো আন্তর্জাতিক খাবারে অভ্যস্ত হতে পারেন না, হোটেল রুমে বসে নিজ হাতে ভর্তা বানান। কোচ পিটার বাটলার মুগ্ধ তাদের লড়াইয়ের মানসিকতায়।
কিন্তু চ্যালেঞ্জ শুধু খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নারীদের খেলা বন্ধ করতে মাঠে হামলার ঘটনাও উল্লেখ করেছে গার্ডিয়ান। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কঠোর পদক্ষেপে দল এগিয়ে চলেছে নির্ভীকভাবে।
স্বপ্ন এখন বিশ্বমঞ্চে
অভিষেক এশিয়ান কাপে ভালো করলে সামনে খুলে যেতে পারে নারী বিশ্বকাপ কিংবা অলিম্পিকের দরজা। আফিদার কণ্ঠে সেই স্বপ্ন স্পষ্ট—‘২০২২ বিশ্বকাপ আমি টিভিতে দেখেছিলাম। ভেবেছিলাম এ মঞ্চ কখনো আমাদের হবে না। কিন্তু এখন বিশ্বাস করি, স্বপ্নটা হাতের নাগালেই।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখন গার্ডিয়ান বাংলাদেশের নারী ফুটবলকে তুলে ধরছে, তখন এটি স্পষ্ট—এই প্রজন্মের মেয়েরা শুধু দেশের গর্বই নয়, এশিয়ান ফুটবলের ভবিষ্যৎও বদলে দিতে চলেছে।
মন্তব্য করুন