প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছার কিশোরবেলা অর্থাৎ ১৩-১৭ বছর বয়সী রেণু হিসেবে দেখা যায় তাকে। এই সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে সৌভাগ্যবান শিল্পী মনে করছেন তিনি। সম্প্রতি এই সিনেমা নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন দীঘি। আলাপচারিতায় ছিলেন রবিউল ইসলাম রুবেল।
নিজেকে রেনু হিসেবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেতে চ্যালেঞ্জ কেমন ছিল? আসলে এই জায়গাটা খুব চ্যালেঞ্জিং। আবার সেই সময়ের একটি চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খুব কঠিন ছিল। আরিফিন শুভ খুব ডেডিকেটেডলি কাজ করেছে। তো আমি চাচ্চিলাম, পর্দায় দেখে যাতে মনে হয় মুজিব আর রেনুই৷ ওনার পাশে যাতে কখনো মনে না হয়, মুজিবের পাশে রেনু নেই। চরিত্রটি যেন রিয়েলস্টিক লাগে। ওই গানটার প্রতিটি লাইনে মানুষ যেন মিশে যেতে পারে সেই চেষ্টা করেছি। মানুষ যেন মনে করে খুব কাছে থেকে দেখছে।
সিনেমাটি দেখে দর্শকদের ইমোশনালের জায়গাটা আসলে কোথায়?
১৫ই আগস্টের বিষয়টি সবাই জানি। কিন্তু আমরা কখনো সেটার ভিজ্যুয়াল করিনি বা দেখিনি। এটা আমাদের কল্পনার বাইরে যে এটাকে আমরা ভিজ্যুয়াল দেখব। এই জিনিসটা এতো সুন্দর করে পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে, যখন যে দেখছে সে তখন সেখানে নিজেকে কল্পনা করছে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, আমি যখন সিনেমাটি দেখেছি তখন মনে হয়েছে আমি সেখানেই বসা। আমার সামনে মনে হয় ঘটনাটা হচ্ছে। আমরা তো ইতিহাস বইয়ে পড়েছি, দেখার পরে আরো বেশি কানেক্ট করতে পারি সেটা। আমার মনে হয় দর্শক এই জায়গায় কানেক্ট করে ইমোশনাল হচ্ছে।
কখনো কী মনে হয়েছে এই চরিত্র আমাকে দিয়ে হবে- না ছেড়ে দিব?
না আমার কখনো মনে হয়নি আমার ছেড়ে দেয়া উচিত। ছেড়ে দেওয়ার কথা চিন্তাও করিনি। কারণ অনেক সাপোর্ট পেয়েছি চরিত্রটি ফুটাতে। আমার সহশিল্পী আরিফিন শুভ অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমার বাবাও অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি যাতে ভালো করি তার জন্যে আমার আশপাশের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে মেন্টালি সাপোর্ট দিয়েছেন। আর যখন দেখলাম সবাই নিজের চরিত্র ফুটাতে অনেক শ্রম দিচ্ছে, তখন চিন্তা করলাম আমাকেও তাদের সাথে তাল মিলিয়ে শ্রম দিতে হবে।
নিজের চরিত্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে কোনো নির্দেশনা ছিল কি না?
আমরা জানি উনি খুব সংগ্রামী একজন নারী এবং উনি বঙ্গবন্ধুর ব্যাকবোনের মতো কাজ করেছেন। কিন্তু একজন ১৩-১৭ বছরের মেয়ে উনি আসলে কেমন ছিলেন এটা কিন্তু আমরা তেমন জানি না। তো প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'উনি খুব খুনশুটি করতেন সেই সময়টায়। এটা দাদা-দাদির মুখে শুনেছি।' শ্যাম বেনেগ্যাল স্যারের তো একটা আলাদা ব্রিফিং ছিলই এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখে ওই কাহিনিগুলো শুনে যতটুকু ক্যামেরায় ধরানো যায় আমি ততটুকুই ক্যামেরায় ধরানোর চেষ্টা করেছি।
সিনেমার স্ক্রিপ্ট পাওয়ার পর চরিত্রটি নিয়ে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল কি না?
যত যাই হোক এই চরিত্রটি আমাকে পারতেই হবে এটাই মনে হচ্ছিল এবং বিশ্বাস হচ্ছিল না আমি রেনু চরিত্রটি করছি।
দীঘির কাজের পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা কী অব্যাহত থাকবে?
আমি চেষ্টা করব কাজের চরিত্রগুলোর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। দর্শকদের একটা আলাদা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে আমাকে নিয়ে৷ তারা আমার কাছে এই প্রত্যাশা রাখে আমার কাছে। আমি চেষ্টা করব দর্শকদের আরও ভালো কাজ উপহার দেওয়ার। আমি চাইব আমার চরিত্রের নাম ধরে মানুষ আমাকে ডাকুক। আমি এভাবেই দর্শকদের সঙ্গে মিশে যেতে চাই রেনু বা তুলি হয়ে।
মন্তব্য করুন