পারিবারিক গল্পের ওপর ভিত্তি করে নাটক তৈরিতে খরচ বেশি হওয়ায় এ ধরনের নাটক নির্মাণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পরিচালক-প্রযোজকরা। তবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ পরিচালকদের অনেকে পারিবারিক গল্পের নাটকে জোর দিচ্ছেন।
একান্নবর্তী নাটকগুলোতে যেভাবে পারিবারিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা যেত বর্তমানের নাটকগুলোতে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই ট্রেন্ডি নাটকের পাশাপাশি পারিবারিক বা সমাজ পরিবর্তনে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে—এমন নাটকের গল্পে জোর দিচ্ছেন পরিচালকরা। যদিও সেটি এই সময়ে অনেক চ্যালেঞ্জের।
তরুণ নির্মাতা আহমেদ শুভ বলেন, বর্তমানে সবাই ট্রেন্ডি কাজ করছে, আমি একটি ট্রেন্ডের বাইরে গিয়ে চিন্তা করছি, কারণ আগে যখন কাজ হতো তখন অনেক গল্পের কাজ হতো। এখন সেই জোয়ারটা নেই। ট্রেন্ডি জোয়ারের বিপরীতে গিয়ে কাজ করার একটা উদ্দেশ্য মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করা।
পরিচালক আদিফ হাসান বলেন, আমরা একটু রিস্ক নিয়ে কাজ করি। ভালো গল্প হলে মানুষ তা দেখেই।
আরমান প্রত্যয় বলেন, প্রতিটা ভালো কাজের পেছনে বাধা থাকে। সেটা টপকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। কাজটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে দর্শকের সামনে আনতে হয়।
অনেক নির্মাতা বলছেন, নাটক তৈরিতে যে অর্থের প্রয়োজন তা না পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে চরিত্র বাদ দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে বাবা-মা।
নির্মাতা আহমেদ শুভ বলেন, গল্পের ক্ষেত্রে যদি প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে রাইটারকে প্রযোজকরা বলে দেন, এই বিষয়গুলো স্ক্রিপ্টে থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা বাজেট। কারণ একটি নাটক করতে প্রপার যে বাজেটটা প্রয়োজন সেটি পাচ্ছি না। যে কারণে বাবা আছে তো মা নেই, মা আছে তো বাবা নেই। কারণ বাজেট স্বল্পতা।
তিনি আরও বলেন, বাজেটের সম্মুখীন যখন হই, তখন সেখান থেকে কীভাবে উৎড়ে আসা যায় সেই চিন্তা করি। তিন রকম প্ল্যান থাকে—‘এ’ ‘বি’ ‘সি’। এগুলোর মধ্যে একটি যদি বাস্তবায়ন করতে না পারি, তাহলে বিকল্প আরেকটিকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয়।
তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাছে সঠিকভাবে গল্প উপস্থাপন করতে পারলে কখনোই নিরাশ হতে হয় না, এমনটাই বলছেন নির্মাতাদের অনেকে।
কজন পরিচালক বলছেন, যতদিন ইন্ড্রাস্ট্রিতে প্রফেশনাল প্রডিউসার আসবে না, করপোরেটরা ইনভেস্ট করবে না, ততদিন এই ইন্ড্রাস্ট্রির কোনো পরিবর্তন হবে না। সবার সহযোগিতা না পেলে কোনোভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না বলেও মনে করছেন পরিচালক শাহজাদা ইসলাম শায়খ।
আদিফ হাসান বলেন, পলিচালকরা যদি সঠিকভাবে বোঝাতে পারে যে আমার গল্পের জন্য এটা প্রয়োজন, এটা লাগবে, গল্প যদি ভালো হয়, তাহলে অবশ্যই বাজেট পাবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে চান তরুণ নির্মাতারা। নতুনদের জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করছি।
আমিসহ আমাদের বেশ কজন তরুণ নির্মাতা যতটুকু সম্ভব প্রতিটি গল্প ভিজুয়াল করে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি, এমনটাই বলছেন আরমান প্রত্যয়। পরিচালক সহীদ উন নবী বলেন, বর্তমানে অনেকে ট্রেন্ডের মধ্যে ভাসছে।
সজিব খান বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে কাজের জায়গায় সৎ থাকলে সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবেই।
নানা রকম প্রতিকূলতা পেরিয়ে তরুণ নির্মাতাদের নিজেদের কাজের প্রমাণ দিয়ে টিকে থাকতে হচ্ছে ইন্ড্রাস্ট্রিতে।
মন্তব্য করুন