আলাস্কার দক্ষিণ উপকূলে বুধবার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডল প্রশাসন সুনামি সতর্কতা জারি করে। পরে সতর্কতাটি নামিয়ে এনে সুনামি পরামর্শ হিসেবে কার্যকর রাখা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৩। সুনামি পরামর্শ কার্যকর ছিল হোমার শহর থেকে আনুমানিক ৬৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে শুরু হয়ে ইউনিম্যাক পাস পর্যন্ত বিস্তৃত, যা প্রায় ১ হাজার ১২৬ কিলোমিটারজুড়ে। অঞ্চলটি তুলনামূলকভাবে জনবিরল হলেও কোডিয়াক শহরে প্রায় ৫ হাজার ২০০ বাসিন্দা রয়েছেন।
প্রথম সুনামি তরঙ্গ স্যান্ড পয়েন্ট নামের একটি গ্রামে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। গ্রামটি আলেউশিয়ান দ্বীপমালার পপোফ দ্বীপে অবস্থিত এবং সেখানে প্রায় ৫৮০ জন মানুষের বসবাস। তবে ভূমিকম্পের এক ঘণ্টা পরেও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের মুখপাত্র জেরেমি জিডেক।
তিনি বলেন, আমরা আগেও এ অঞ্চলে এমন ভূমিকম্প দেখেছি যেখানে বড় ধরনের সুনামি দেখা দেয়নি, তবুও আমরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যাতে মানুষ দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে।
উনালাস্কা শহরে, যেখানে প্রায় ৪ হাজার ১০০ জনের বাস, স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের অন্তত ৫০ ফুট উচ্চতায় বা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ভেতরের দিকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। একইভাবে কিং কোভ শহরে, যেখানে প্রায় ৮৭০ জনের বসবাস, উপকূলীয় অঞ্চল থেকে উঁচু স্থানে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কোডিয়াক পুলিশ বিভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় বাসিন্দাদের স্থানীয় প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকা জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করার আহ্বান জানায়।
এদিকে ওয়াশিংটন স্টেটের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, আলাস্কার এই ভূমিকম্প থেকে তাদের রাজ্যে কোনো ধরনের সুনামির ঝুঁকি নেই। গভীর সমুদ্রে থাকা ডার্ট বুয়ির মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে হাওয়াইয়ের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগও নিশ্চিত করেছে, তাদের রাজ্যের জন্যও কোনো সুনামির হুমকি নেই।
যদিও আঙ্করেজ শহরের বাসিন্দারা জরুরি সতর্কবার্তা পেয়েছেন, শহরটির জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্পষ্ট জানিয়েছে, আঙ্করেজের জন্য কোনো সুনামি হুমকি নেই।
ভূমিকম্পটি তীব্র হলেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। তবে সতর্কতা হিসেবে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নজরদারি ও প্রস্তুতি বজায় রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
মন্তব্য করুন