

ডায়াবেটিস ধরা পড়লে খাবার, ব্যায়াম, জীবনযাপন সবই পাল্টে যায়। কিন্তু অনেকেই নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা মাপেন না। ফল হল, শরীরে সুগার ওঠানামা করছে কি না তা বোঝা যায় না। সঠিক সময় ও নিয়মে সুগার টেস্ট করলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়ে যায়।
রক্তে শর্করা কতবার মাপা প্রয়োজন? অনেকেই মনে করেন ৩ বা ৪ মাস অন্তর শুধু ফাস্টিং ও র্যান্ডম টেস্ট করলেই যথেষ্ট। কিন্তু এতে প্রতিদিনের শর্করার ওঠানামা বোঝা যায় না। বিশেষ করে যাদের সুগার বেশি, ইনসুলিন নেন অথবা নিয়মিত ওষুধ খান, তাদের দিনে কয়েকবার রক্ত পরীক্ষা করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রয়োজন হলে দিনে ৬ বার সুগার টেস্ট করলে শরীরের প্রতিক্রিয়া স্পষ্টভাবে বুঝে ফেলা যায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে (খালি পেটে) : ডিনার থেকে সকালের টেস্টের মাঝে ৮-১০ ঘণ্টা বিরতি থাকা দরকার।
ব্রেকফাস্ট খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে : এতে বোঝা যায় খাবারের পর শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
লাঞ্চের ৩০ মিনিট আগে : এটা প্রি-মিল সুগার স্তর বোঝায়।
লাঞ্চের ২ ঘণ্টা পরে : পোস্ট-মিল রিডিং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ডিনারের ৩০ মিনিট আগে : লাঞ্চের মতোই ডিনারের আগের মানটাও জরুরি।
ডিনারের ২ ঘণ্টা পরে : দিনশেষের রক্তে শর্করার অবস্থা এই টেস্টে স্পষ্ট হয়।
প্রতিটি সময়ের সুগার লেভেল একটি ডায়েরিতে লিখে রাখার অভ্যাস করুন। ডাক্তার দেখাতে গেলে এই নোটগুলো দিলে চিকিৎসক আপনার ডায়াবেটিসের পুরো চিত্রটি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। কোন খাবারে সুগার বাড়ছে বা কমছে, কোন সময়ে সমস্যা হচ্ছে—এসব সহজে ধরা পড়ে।
- যাদের রক্তে শর্করা অনেক বেশি ওঠানামা করে
- যারা ইনসুলিন নেন
- নতুন করে ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে, চিকিৎসা ঠিক করতে তদারকি প্রয়োজন
- গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস (জিশটেশনাল ডায়াবেটিস) হলে
যদি সুগার নিয়মিত কন্ট্রোলে থাকে এবং ডাক্তারও বলেন, তাহলে প্রতি মাসে একবার ফাস্টিং ও র্যান্ডম টেস্ট করলেই হয়।
বাংলাদেশে এখন ঘরে ব্যবহারের গ্লুকোমিটার পাওয়া যায়, দামও তুলনামূলক কম। এগুলো ব্যবহার করতে সহজ এবং দ্রুত ফল দেয়। অনেকেই খাবারের সময় ঠিকমতো না মেনে ওষুধ খান, এতে রিডিং ভুল আসতে পারে। সঠিক সময় মেনে ওষুধ খাওয়াও জরুরি। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, ব্যায়ামের ঠিক আগে বা পরে সুগার কমে যেতে পারে—এ বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন