প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বদলে গেছে আমাদের রান্নাঘরের দৃশ্য। মসলা বাটার জন্য যেখানে এক সময় শিলপাটা বা শিলবাট্টাই ছিল ভরসা, এখন তার জায়গা নিয়েছে ইলেকট্রিক মিক্সচার গ্রাইন্ডার। এতে যেমন সময় বাঁচে, তেমনি পরিশ্রমও কম হয়। তবে স্বাদ ও স্বাস্থ্য—এই দুই বিষয়ের দিক থেকে শিলপাটা এখনো এগিয়ে আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ানরা জানিয়েছেন, শিলপাটায় তৈরি মসলা ও চাটনি শুধু স্বাদেই নয়, স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও অনেক বেশি কার্যকর।
স্বাস্থ্যের জন্য শিলপাটার উপকারিতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিলপাটায় মসলা বাটলে তার প্রাকৃতিক সুগন্ধ এবং পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে। মিক্সচারে উচ্চ গতির ঘর্ষণে মসলা অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে, যা পুষ্টিগুণ কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে, শিলপাটায় ধীরে ধীরে মসলা বাটায় সেই তাপ উৎপন্ন হয় না।
ডায়েটিশিয়ানদের মতে, শিলপাটায় বাটা মসলার গন্ধ নাকে ঢুকে মস্তিষ্কে পৌঁছে ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে যাদের ক্ষুধামান্দ্য আছে, তাদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।
এ ছাড়া, শিলপাটায় চাটনি বা মসলা বাটার সময় হাত ও শরীরের হালকা ব্যায়াম হয়, যা শরীরচর্চার মতোই কাজ করে। এতে পেট ও ঊরুর চারপাশে চর্বি জমা কমে।
সময়ের সাশ্রয় বনাম স্বাস্থ্য উপকারিতা
যদিও শহরের ব্যস্ত জীবনে মিক্সচার গ্রাইন্ডার ব্যবহারে সময় বাঁচে, কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞই পরামর্শ দিচ্ছেন—সপ্তাহে অন্তত এক দিন হলেও শিলপাটার ব্যবহার বজায় রাখতে। এতে খাবারের স্বাদ যেমন বাড়বে, তেমনি শরীরও উপকৃত হবে।
রান্নায় সময় বাঁচানোর জন্য মিক্সচার গ্রাইন্ডার একটি দরকারি যন্ত্র হলেও, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পুষ্টিগুণের দিক থেকে শিলপাটার গুরুত্ব এখনো অক্ষুণ্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্যকেও ধরে রাখা উচিত, বিশেষ করে যখন তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
মন্তব্য করুন