ওজন ঠিক রাখা শুধু দেখার ব্যাপার না—এটা স্বাস্থ্যের জন্যও খুব দরকারি। অতিরিক্ত ওজন বাড়লেই শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। এজন্য অনেকেই ওজন কমানোর চেষ্টা করেন—ডায়েট করেন, শরীরচর্চা করেন। আর ডায়েট মানে, তালিকায় যেটা প্রথম দিকে চলে আসে, সেটা হলো—শসা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, শসা খেলে সত্যিই কি ওজন কমে? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা আর হেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন—শসা একদমই লো ক্যালোরি খাবার। এক কাপ শসাতে ক্যালরি মাত্র ১৬! শসার প্রায় ৯৫% অংশই পানি।
এর মানে হলো, শসা খেলে পেট ভরে থাকে, কিন্তু শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে না। এতে ক্ষুধা কমে যায়, ফলে কম খাওয়া হয়—যা ওজন কমানোর জন্য খুব কার্যকর।
শুধু তাই নয়, শসায় থাকা কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাকের হার (metabolism) বাড়ায়, ফলে শরীর দ্রুত ক্যালরি খরচ করে।
১. শরীরের পানির ঘাটতি দূর করে
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে শসা দারুণ উপকারী। যেহেতু এতে পানি প্রচুর, তাই এটি খাওয়া মানে অনেকটা পানি খাওয়ার মতোই কাজ করে।
২. কোষ্ঠকাঠিন্যে কাজ দেয়
শসায় আছে ভোজ্য আঁশ (fiber) ও পানি—এই দুই উপাদান হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। বিশেষ করে শসার বীজ এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।
৩. পুষ্টিতে ভরপুর
শসায় থাকে:
- ভিটামিন সি, কে
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- ম্যাঙ্গানিজ
- ফাইবার
এ ছাড়া, এতে আছে নানা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ করে।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
শসার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) মাত্র ১৫—অর্থাৎ এটি রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে বাড়ায় না। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫. ত্বক রাখে টানটান ও উজ্জ্বল
যারা ত্বকের প্রতি যত্নশীল, তাদের জন্যও শসা উপকারী। এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকে সতেজ ভাব এনে দেয়।
কখন খাওয়া ভালো?
- সকালের নাশতার সঙ্গে
- দুপুরে সালাদ হিসেবে
- বিকেলে স্ন্যাকস হিসেবে
- অথবা পানির বদলে স্মুদি বা ডিটক্স ওয়াটারে
শুধু কেটে খাওয়াই নয়, শসা যোগ করতে পারেন স্মুদি, টক দই, ওটস বা ফলের সালাদেও।
শসা একটা খুব সহজলভ্য, কম ক্যালরি, পুষ্টিকর ও রিফ্রেশিং খাবার। ওজন কমাতে চাচ্ছেন? পেট হালকা রাখতে চাচ্ছেন? ত্বক ঝলমলে চাই?—তাহলে শসাকে ডায়েট চার্টে রাখতেই হবে।
তবে শুধু শসা খেয়ে ওজন কমবে, এমন নয়। ব্যালেন্সড ডায়েট, পানি পান, ঘুম আর নিয়মিত অ্যাকটিভ থাকার দিকেও নজর দিতে হবে।
মন্তব্য করুন