সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে তারা সমবেত হতে থাকেন। পরে রাত ৮টার দিকে একটি মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’; ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’; ‘কোটা বাতিল করো, করতে হবে’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে একই দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশেরও ডাক দিয়েছেন তারা। এ সময় সরকারি চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের দাবিও আন্দোলনকারীরা।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, আমরা ২০১৮ সালে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা তখন রক্ত দিয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল। কিন্তু আবারও আজ হাইকোর্ট সেই কোটা পুনর্বহাল করেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা হাইকোর্টের এ রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরও বলেন, একটা দেশে কখনো ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। এটা সেই দেশের মেধাবীদের সঙ্গে তামাশা করার মতো। আমরা আমাদের সঙ্গে এ তামাশা মেনে নেব না। আমরা রাজপথে এসেছি, আজকের এটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। আমরা আবারও কালকে আসব। যদি এ রায় বহাল থাকে তাহলে আমরা রাজপথে আবারও নামতে বাধ্য হবো। আমরা আমাদের দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরে যাব না।
কর্মসূচি ঘোষণা করে নাহিদ হাসান বলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে রাজু ভাস্কর্যে আবারও একটি সমাবেশ করা হবে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব, এ রায় যেন বহাল না থাকে। শিক্ষার্থীরা এ রকম বৈষম্য মানবে না।
প্রসঙ্গত, বুধবার (৫ জুন) সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বহাল থাকল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মন্তব্য করুন