

ইটপাথরের নগরজীবনে সবুজের ছোঁয়া পেতে ছাদবাগান, বারান্দা ও ঘরের বিভিন্ন জায়গায় নানারকম গাছের সমাহার ঘটে। নানা কারণে এসব জায়গায় সব সময় গাছ ভালো রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যেসব ভুলের কারণে গাছ মরে যেতে পারে, তেমনই কিছু সাধারণ সমস্যা ও তার সমাধানও রয়েছে।
গাছের জাত ও উচ্চতাভেদে টব নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভুল গড়নের টব গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা আছে, এমন মাটির টব বেছে নেওয়া ভালো। তবে ফার্ন, এলোকেশিয়ার মতো যেসব গাছ একটু আর্দ্র বা ভেজা মাটি পছন্দ করে, চাইলে সেগুলো প্লাস্টিক টবে রাখা যায়।
অন্যদিকে ক্যাকটাস, সাকুলেন্টজাতীয় রসালো কাণ্ডের গাছের জন্য মাটির টবই উত্তম। আবার অর্কিডের জন্য বেছে নিতে হবে বহু ছিদ্রযুক্ত প্লাস্টিকের ঝুড়ির মতো বিশেষ টব। এ টবে মাটির কোনো প্রবেশাধিকার নেই! শুধু নারকেলের ছোবড়াতেই অর্কিড গাছ বসিয়ে দিতে হয়। অন্য টবের মতো পানি না ঢেলে শুধু স্প্রে করলেই হয়।
ছায়াবান্ধব ইনডোর গাছ স্বভাবতই সরাসরি সূর্যের আলো পছন্দ করে না। রোদে গাছের পাতা সাদাটে হয়ে আসতে পারে। এমনকি পুড়েও যেতে পারে। তাই ঘরের জানালা কোন দিকে মুখ করে আছে, সেই বিবেচনায় রেখে গাছের অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে। পূর্ব ও উত্তরমুখী জানালার চেয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিমের জানালা সরাসরি সূর্যের আলো বেশি পড়ে। ফলে ক্যাকটাস, কাঁটামুকুটের মতো গাছগুলো সরাসরি সূর্যের আলোয় রাখতে পারলেও বাকি গাছ সরাসরি রোদ থেকে দূরে রাখাই ভালো।
পরম যত্নে তৈরি করা প্রিয় গাছগুলোর সতেজ সবুজ স্বাভাবিক চেহারা পাল্টে দিতে পারে পোকামাকড়ের আক্রমণ। ছত্রাকের সংক্রমণ আর মিলিবাগের আক্রমণই হয় বেশি। পোকা ও ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার যাবে জৈব বালাইনাশক নিম তেল। প্রতি ২৫০ মিলিলিটার পানির সঙ্গে ১০ মিলিলিটার নিম তেল মিশিয়ে স্প্রে করলেই হয়।
আগাম আক্রমণ ঠেকাতে প্রতি ১৫ দিন পরপর নিম তেলের মিশ্রণটি স্প্রে করতে হয়। এ ছাড়া দেখামাত্রই হলুদ হয়ে আসা পাতা ও মরা ডালপালা ছাঁটাই করে দিতে হবে। ভেজা টিস্যু পেপার দিয়ে নিয়মিত গাছের পাতায় জমে থাকা ধুলা পরিষ্কার করে দিতে হবে। তাহলে বাসা বাড়ির টবে লাগানো গাছ আর অকালে মরবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন