বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন থেকে কর্মপরিত্যাগের শর্তে তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি সদ্য পদত্যাগ করা আব্দুর রউফ তালুকদারের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নির্ধারিত বয়সসীমা ছিল সর্বোচ্চ ৬৭ বছর। এজন্য মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে গভর্নরের নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশ সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর রাতে আহসান এইচ মনসুরকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ড. মনসুর ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, একই বছর তিনি অর্থনীতিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কানাডা চলে যান। একজন স্নাতকোত্তর ছাত্র এবং গবেষণা সহকারী হিসেবে তিনি কানাডার ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৭৮-৮১) স্নাতক পর্যায়ে নিয়মিত অর্থনীতি কোর্সও পড়াতেন।
এরপর তিনি ১৯৮১ সালে ইকোনমিস্ট প্রোগ্রামের অধীনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) যোগদান করেন এবং তারপর ১৯৮২ সালে ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। আইএমএফে তার দীর্ঘ কর্মজীবনে ড. আহসান এইচ মনসুর মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন দেশে কাজ করেছেন। তিনি আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী বিভাগগুলোতে (রাজস্ববিষয়ক ও নীতি পর্যালোচনা এবং উন্নয়ন বিভাগ) এবং অঞ্চলভিত্তিক বিভাগগুলোতে (মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া এবং এশীয় বিভাগ) কাজ করেছেন।
এ ছাড়াও তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আইএমএফের সিনিয়র আবাসিক প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর (১৯৮৯-৯১) আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে তার নিয়োগের সময় ড. মনসুর প্রাথমিকভাবে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন করের সফল প্রবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সম্প্রতি তিনি উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সৌদি আরব, কুয়েত ও ওমানে আইএমএফ মিশনের প্রধান ছিলেন।
আইএমএফ থেকে দ্রুত অবসর গ্রহণের পর নীতি বিশ্লেষণের লক্ষ্যে ও একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যান্য পেশাদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে ড. মনসুর বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।
বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ জার্নালে ড. মনসুরের অসংখ্য প্রকাশনা রয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট লেখক হিসেবে সুপরিচিত।
মন্তব্য করুন