কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩, ০৩:১২ পিএম
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, ০৩:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বসিক নির্বাচন

দলে দলে নগরে ঢুকছেন চরমোনাই পীরের অনুসারীরা

দলে দলে বরিশাল নগরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন ফয়জুল করীমের অনুসারীরা। ছবি: সংগৃহীত
দলে দলে বরিশাল নগরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন ফয়জুল করীমের অনুসারীরা। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখার প্রতীকে মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনায় চরমোনাই থেকে তার অনুসারী লাঠিসোঁটা নিয়ে দলে দলে নগরে ঢুকছেন। সোমবার (১২ জুন) দুপুরের পর তাদের ঢুকতে দেখা যায়। এতে বরিশাল নগরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে হাতপাখা প্রার্থীর অনুসারীদের নগরে ঢোকার খবর পেয়ে পুলিশ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয় পুলিশ বেলতলা খেয়াঘাট আটকে দিয়েছে।

অন্যদিকে এই ঘটনায় নৌকার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট আফজালুল করিম রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, হাতপাখার কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও তলোয়ার নিয়ে নগরে ঢুকে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছেন।

এর আগে আজ ‍দুপুরে ফয়জুল করীম দাবি করেন, তার ওপর হঠাৎই হামলা করা হয়েছে এবং তাকে অনেক মারধরও করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ফয়জুল করীম বলেন, আওয়ামী লীগের কার্ডধারী লোকজন আমাকে প্রথমে কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি। তখন আমি বললাম, আপনি তো প্রশাসনের কেউ না, তাহলে আমাকে ঢুকতে দেন না কেন। ওখানে একজন মহিলা পুলিশ ছিল, উনি একদম নির্বাক।

তিনি বলেন, আমরা কতগুলো অভিযোগ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যাই। সেখানে অভিযোগ দেওয়ার পরে বের হয়ে ২৭ নম্বর কেন্দ্রে সাবেরা খাতুন স্কুলে ঢুকে দেখি আওয়ামী লীগের ব্যাজধারী লোকজন ভেতরে। তখন আমি প্রিসাইডিং অফিসারকে গিয়ে বললাম, এখনো তো ব্যাজধারীরা থাকতে পারে না। তখন আমি তাদের বললাম, আপনারা কি এখানকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা? তারা বলল, না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত মেয়র প্রার্থী বলেন, ওখানে যারা আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বশীল লোক ছিল, তাদের বললাম নির্বাচনে যে বিজয়ী হয় হোক আমরা শুধু প্রভাব সৃষ্টি করব কেন, এভাবে কথা বলতে বলতে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে গেছে। এসব বলতে বলতে হঠাৎ আমার ওপরে আক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। আমি তো চিন্তাও করতে পারিনি, কোনো উত্তেজনাপূর্ণ কথাও হয়নি, হঠাৎ করে আমার ওপর আক্রমণ শুরু করেছে। পরে আমার লোকজন নিয়ে আমি বের হয়ে যাই।

এর আগে সকালে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফয়জুল করীম বলেছিলেন, ভোট গ্রহণের শুরুটা ভালো, আলহামদুলিল্লাহ। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। ভোটারদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হলে যে কোনো ফলাফল মেনে নেব। এ ছাড়া কোনো কারচুপি হলে ভিন্ন প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। এর জন্য আমরা তখন আন্দোলন করব। আদালতে রিট করা হবে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো। দীর্ঘদিন পরে মানুষ ভোট দেওয়ার পরিবেশ পেয়েছে। যেন মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ। ভোট যদি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ আর গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে যা হয় আমরা সেটাই মেনে নেব। এ ছাড়া শেষ পর্যন্ত মানুষ যদি ভোট দিতে পারে, তাহলে সর্বোচ্চ ভোট নিয়ে হাতপাখা জয়লাভ করবে।

ইভিএম নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কিনা—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এই প্রার্থী বলেন, অবশ্যই আছে। ইভিএম একটি কঠিন শঙ্কা। এটি সহজ কোনো বিষয় নয়। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, আমরা যেন শঙ্কামুক্ত থাকি। এ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের বলেছেন, প্রতিটি রেজাল্টের প্রিন্ট কপি তারা আমাদের দেবেন। আমরাও তাদের বলেছি, তারা যেন হাতে লেখা কোনো রেজাল্ট শিট আমাদের না দেন।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে ভোট গ্রহণ চলবে। প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ ইভিএম। এসব ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।

বরিশাল সিটির ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ঘড়ি প্রতীকের মো. কামরুল আহসান রুপন, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান ও হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন।

এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ জনসহ মোট ১৬৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে এই নির্বাচন মনিটর করছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট আয়োজনে সার্বিক প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে গতকাল রোববার রাতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যায় নির্বাচনী সরঞ্জাম। যে কোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশে ইন্টার্ন করার সুযোগ

পুয়ের্তো রিকোকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে আর্জেন্টিনার জয়

চীনকে ঠেকাতে অভিনব উদ্যোগ ভারতের

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৫ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

৩৫ বছর পর আজ চাকসুর ভোট

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে বড় নিয়োগ

রাজস্থানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বাসে আগুনে পুড়ে ২০ জনের মৃত্যু

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক স্টাফ কলেজ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

মার্কারের পরিবর্তে চক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে ডিবিএল সিরামিকস ‘টাইলচক’ 

১০

বিশ্বে শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান কত?

১১

হোয়াইটওয়াশ লজ্জায় বাংলাদেশ, একশও ছুঁতে পারলেন না মিরাজরা

১২

হাটহাজারীতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত

১৩

জাল সনদে ১৮ বছর শিক্ষকতা, জেনেও ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষ

১৪

ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতায় শাবনূরের আবেগঘন বার্তা

১৫

যুদ্ধের উসকানি দিয়ে শান্তির প্রতীক হওয়া যায় না, ট্রাম্পকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১৬

বাবার সঙ্গে আলোর শেষ কথা—আমরা আটকে গেছি

১৭

লাইভে এসে সংসদ ভেঙে দিলেন পালিয়ে যাওয়া মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

১৮

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড : দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

১৯

ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থীকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

২০
X