দেশে ৪৫ শতাংশ রোগীর যক্ষ্মা রোগ শনাক্ত করা যায় না। অথচ যক্ষা রোগের চিকিৎসায় কোনো খরচ নেই। বিনা পয়সায় চিকিৎসা করা যায়। যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রী। বিশ্বের ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি লাখে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ২২১ জন, যা বিশ্বে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ২৪ জন। যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঠেকাতে প্রয়োজন জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর দৈনিক ইত্তেফাক সম্মেলন কক্ষে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রায় ২০ জন সাংবাদিক এ বৈঠকে অংশ নেয়।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেয় ডিজিএইচএসের এনটিপি ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় টিবি বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা জামান। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সাবেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান এবং সহযোগী অধ্যাপক আরিফ-উজ-জামান খান, ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাইহা মাজিয়া। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর তৌহিদা সুলতানা।
আলোচনা সভার মূল লক্ষ্য হলো যক্ষ্মার (টিবি) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা শক্তিশালী করা। পাশাপাশি কমিউনিটি অধিকার ও লিঙ্গ (সিআরজি) সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষেকের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং টিবিসংক্রান্ত মৃত্যু ও সংক্রমণ হ্রাসের সমাধান প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ যক্ষ্মা টিবির কেস হল পালমোনারি টিবি। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সাল থেকে ডট কার্যক্রম এর মাধ্যমে যক্ষ্মার জীবানু প্রতিরোধের জন্য সামগ্রিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এই যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যমণ্ডিত প্রোগ্রাম হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। যক্ষ্মা শুধু বড়দের না, বাচ্চাদের মধ্যেও এটি সংক্রমিত হয়। প্রতিবছর আনুমানিক ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা এই যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন পুরুষ, ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মহিলা এবং ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিশু। বড়দের পাশাপশি শিশুদেরও যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমনের হার ক্রমাগত বাড়ছে।
এ ছাড়াও তিনি প্রতিটি মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। ডা. ফারজানা জামান বলেন, একজন মানুষের শরীরে চুল ও নখ ছাড়া সব জায়গায় যক্ষ্মার ব্যপ্তি বা রোগ রয়েছে। সুপ্ত যক্ষ্মা রোগী ১০০ জনের মধ্যে দশজন রয়েছে। ২০১২ সালে ২০টি এক্সপার্ট মেশিন ছিল। এখন ৮৩৩টি এক্সপার্ট মেশিন দিয়ে আমরা যক্ষ্মা রোগীকে শনাক্ত করতে পারছি। পলিসির মাধ্যমে আমরা যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে কাজ করছি। সাইহা মার্জিয়া বলেন, শিশুর যক্ষ্মা হলে বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে পারেন না, তার সন্তান যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
মন্তব্য করুন